পদ্মায় স্রোতের তীব্রতা অস্বাভাবিক বেড়েছে। এ কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। স্রোত এড়িয়ে চলার জন্য চার কিলোমিটার পথ ঘুরে চলতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে। এতে করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ফেরি পারাপার হতে দ্বিগুণ সময় লাগছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাট এলাকায় দেখা দিচ্ছে যানজট।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। কোরবানির পশু বিক্রির জন্য রাজধানীর দিকে ছুটছেন ব্যবসায়ীরা। চার দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে পশুবাহী ট্রাক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পদ্মা পার করানো হচ্ছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতা।
মূল পদ্মায় প্রবেশ এবং মূল পদ্মা থেকে চ্যানেলে প্রবেশের পথে তীব্র স্রোতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে। স্রোত ঠেলে চলাচল করতে না পারায় প্রায় চার কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করছে। এ ছাড়া স্রোত উপেক্ষা করে চলতে না পারায় বন্ধ রাখা হয়েছে দুটি ডাম্প ও একটি ছোট ফেরি। বর্তমানে নৌরুটে চারটি রো রো, ছয়টি কে-টাইপ, চারটি ডাম্পসহ মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। আজ রোববার সকাল থেকে নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলছে। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের চাপ রয়েছে।
ট্রাকচালক সোবাহান বলেন, ‘তিন দিন ধইরা ঘাটে আটকে আছি। ঘাটে গাড়ির প্রচুর চাপ আছে। কোরবানির পশুবাহী ট্রাক পার করতাছে। এ কারণে সাধারণ ট্রাক আটকে আছে টার্মিনালে।’
আরেক ট্রাকচালক শাজাহান মিয়া বলেন, ‘শুনতাছি স্রোতের কারণে সব ফেরি চলে না। তা ছাড়া পদ্মা পার হইতে সময় বেশি লাগে। এ কারণে ঘাটে আটকা পইড়া থাকতে হইতাছে।’
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন জানান, ‘স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটে যানবাহন আটকে রয়েছে। তবে কোরবানির পশুবাহী পরিবহন সবার আগেই পার করা হচ্ছে। ঘাটে তাদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। তবে পণ্যবাহী কিছু ট্রাক ঘাটে আটকে আছে।’
বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঘাটে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা কঠোর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। মূল সড়ক থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী কোরবানির পশুবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যবাহী পরিবহন ঘাটে প্রবেশ করছে। ঘাট এলাকায় কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক আগে পার করছি।’
মো. জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে পদ্মায় স্রোত বেশি থাকায় একটি ফেরি যানবাহন লোড করে ঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে অপর ঘাটে পৌঁছে আনলোড করতে সব মিলিয়ে ৫ ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়। ফলে দিনরাতে ফেরির ট্রিপের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। ফলে চাহিদামতো যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও পশু ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স সবার আগে ফেরিতে ওঠানো হচ্ছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’