রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকার মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে ছুরিকাঘাতে কামরুল হাসান (২৩) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তার কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ও একটি ফোন খোয়া গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত কামরুল নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড়া গ্রামের ইমাম হোসেনের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে কদমতলী রায়েরবাগ এলাকায় থাকতেন। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে কামরুল ছিলেন সবার বড়।
নিহতের বাবা ইমাম হোসেন জানান, কামরুলের মানিকনগর ফুটপাতে কাপড়ের ব্যবসা আছে। সাত-আট বছর আগে হিফজ পড়া শেষ করেছিল কামরুল। এরপর মানিকনগরে ফুটপাতে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। বেশ কিছুদিন আগে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন কামরুল। বুধবার রাতে কক্সবাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাগে জামাকাপড় গুছিয়ে বাসা থেকে বের হন। তাঁর বন্ধুরাও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি আরও জানান, বাসার সামনে থেকে গুলিস্তানগামী একটি বাসে ওঠেন কামরুল। বাসটি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় সায়েদাবাদে ফ্লাইওভারের ওপরেই নামেন। সেখান থেকে হেঁটে ফ্লাইওভারের ঢাল দিয়ে নিচে নামার সময় কে বা কারা তাঁর বুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে বাবাকে ফোনে বিষয়টি জানান। তখন তারা সায়েদাবাদ ইসলামী হাসপাতালে গিয়ে ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তাঁকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, কামরুলের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। ছিনতাইকারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে নাকি পরিকল্পিতভাবে কেউ তাঁকে এভাবে হত্যা করেছে, তিনি তা বলতে পারছেন না। তবে কামরুল বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কারও সঙ্গে ফোনে তর্কাতর্কি হতে দেখেছেন তাঁর মা।
যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে সায়েদাবাদ ফ্লাইওভারের ঢালে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন তিনি। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।