ঢাকার কেরানীগঞ্জে রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার বাকি আসামিরা হলেন আলমগীর হোসেন ওরফে ঠান্ডু (৩৯), মো. আমির হোসেন (৩৮), মো. শিপন (৩১), দেলোয়ার হোসেন দেলু (৩৭), মো. রনি (৩৫), অনিক হাসান হিরা (৩০), মো. সজীব (৩৬), ফিরোজ (৩১), রাজীব আহমেদ (৩৫), মো. মাহফুজুর রহমান (৩৬) ও মো. রতন শেখ (২৮)।
এর আগে ১০ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে রাতভর নির্যাতন চালিয়ে রাসেল নামে ওই যুবককে হত্যা করা হয়। পরে আসামিরা আত্মগোপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ১০ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাট পারভিন টাওয়ারের নিচে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে রাতভর নির্যাতন চালিয়ে রাসেল নামের ওই যুবককে হত্যা করার পর আসামিরা গা ঢাকা দেয়। পরবর্তী সময় নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ছয় সহযোগীসহ প্রধান আসামি ‘আব্বা’ বাহিনীর প্রধান আফতাব উদ্দিন রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া ভোলাসহ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয়জনসহ মোট ১২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, নিহত রাসেল ও মামলার ১ নম্বর আসামি আফতাব উদ্দিন রাব্বি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি রাব্বিসহ শুভাঢ্যা ইউনিয়নের কালীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন। চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে রাব্বি ও তাঁর সহযোগীরা রাসেলের ওপর ক্ষুব্ধ হন এবং উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রাব্বি লোকজন দিয়ে রাসেলকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর অফিস কক্ষে রাব্বি ও তাঁর সহযোগীরা মিলে রাতভর রাসেলের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালান। নির্যাতনের একপর্যায়ে রাসেল রাব্বিকে ‘আব্বা আব্বা’ ডেকে বাঁচার জন্য আকুতি-মিনতি করলেও তাঁকে ছাড় দেননি তাঁরা।
পুলিশ সুপার জানান, একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে রাব্বির লোকজন রাসেলকে অচেতন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তাঁর বাসায় দিয়ে আসেন। পরদিন সকালে স্বজনেরা রাসেলকে মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।