নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে সুপেয় পানির নামে জীবাণুযুক্ত দুর্গন্ধময় পানি সরবরাহের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সংস্থাটি খাওয়ার উপযোগী পানি সরবরাহে বিদেশি ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও এর সুফল রাজধানীবাসী পাচ্ছে না। উল্টো সাধারণ মানুষের মাথাপিছু ঋণের বোঝা বাড়ছে। এটি অনেকটা ঋণ করে ঘি খাওয়ার প্রবণতার মতো। এদিকে ঋণ পরিশোধে বছর বছর অন্যায়ভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে পানির দাম।
আজ বুধবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘পানির দাম নিয়ে নাগরিক সমাজের মতবিনিময়’ সভায় আলোচকেরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘খাবার উপযোগী পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং অনিয়ম অপচয় দূর করতে হবে। সংস্থাটিকে ঋণ করে ঘি খাওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এটাই হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার প্রধান কর্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা অন্যায়ভাবে পানির দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে তাদের কর্তাব্যক্তিরা ইচ্ছে মতো নিজেদের বেতন বাড়িয়ে নিচ্ছে। এটা কতটুকু নৈতিক?’
এ সময় গবেষক আমিনুর রসূল বাবুল বলেন, ‘ওয়াসা তো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান না, যে আপনারা পানি বিক্রি করে ব্যবসা করবেন। পানিতে ভর্তুকির নামে লুটপাট বন্ধ করুন।’ তিনি বলেন, ‘পানির দাম না বাড়িয়ে, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিনা মূল্যে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা উচিত।’
বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা বলছে, পাইপলাইনে সরবরাহকৃত ৮০ শতাংশ পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু ই–কোলাই রয়েছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পানিবাহিত রোগে ভুগছে দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কারণ তাঁরা চাইলেও বোতলজাত পানি কিনে খেতে পারেন না।’
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসা শ্রেণিভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য পানির মূল্য বর্তমানে চাইতে আরও কমিয়ে আনতে হবে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যবহারকারী এবং উচ্চবিত্তদের জন্য পানির মূল্য বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যাতে কোনো ভাবেই জনগণের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে।’