নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কবি হেলাল হাফিজের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কবির পরিবার, ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে বাংলা একাডেমিতে আসেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি বলেন, ‘মাত্র একটা কবিতার বই লিখে আমার জানা নেই একটা জাতির শিল্প সংস্কৃতির ইতিহাসে এত ইম্প্যাক্ট আর কোনো কবি রাখতে পেরেছেন কি না। তার খুব বেশি কবিতার বই বের হয়নি, কিন্তু তারুণ্য এবং যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে—এটা তাঁর অর্জন। বাংলাদেশের সংস্কৃতিজগৎ তার শূন্যতা বোধ করবে। একটি কবিতার বই দিয়েই তার অবস্থান তিনি চিরস্থায়ী করে গেছেন।’
উপদেষ্টা বলেন, তাঁর অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি থাকলে সেই বিষয় এবং যেহেতু তাঁকে স্বাধীনতা বা একুশে পদক দেওয়া হয়নি, এখন মরণোত্তর পদকের বিষয়টি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দেখবে।
কবির ছোট ভাই নেহাল হাফিজ বলেন, ‘দাদার কবিতা, চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব একাকার ছিল। ওনার অকালমৃত্যুতে আমরা পরিবারের একজন সদস্য হারালাম, সেই সঙ্গে সাহিত্যজগতে একটি নক্ষত্র হারালাম।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের নেতৃত্বে একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রয়াত কবির মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশ নেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আতাউর রহমান, কবি রফিক আজাদ স্মৃতি পরিষদ, প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য, নান্দিকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় প্রয়াত কবির পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কবি হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়বেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। পরে তাঁকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।