চার বছর ধরে হাঁটতে পারেন না হাসান সরদার (৩২)। সড়ক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে পঙ্গু জীবনযাপন করছেন তিনি। তবে সোজা হয়ে হাঁটতে না পারলেও নিজেই কাজ করে সংসারের হাল ধরেছেন। কারও কাছে হাত পেতে নয়, কাজ করে খেতে পেরে আত্মতৃপ্তি পান প্রতিবন্ধী হাসান।
আজ ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে হাসান সরদারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের আব্দুল গণি সরদার ও হামিদা বেগমের ছেলে। চার বছর আগে ঘুরতে বেরিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর জমিজমা বিক্রি ও বন্ধক রেখে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে হাসানকে সুস্থ করে পরিবার। সুস্থ হলেও দাঁড়াতে পারেন না তিনি। পঙ্গু হওয়ায় হাসানকে ঢাকার একটি পোশাক কারখানা থেকে চাকরি হারাতে হয়। তবে তিনি দমে যাননি।
শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কেউ কাজ বা চাকরি দেবে না জেনে নিজেই ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেন হাসান। প্রতিদিন সকালে হুইলচেয়ারে ভর করে ঝালমুড়ি, চানাচুর, বাদাম, চিপস, আচারসহ নানা রকম খাবার বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য বের হন। গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজার, স্কুল-কলেজ ও জনবহুল জায়গায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন খাবার। সেই টাকায় মা-বাবা ও ছোট এক ভাই নিয়ে হাসানের সংসারের খরচ জোগাড় হয়। তবে মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে সংসার কোনো রকমভাবে চললেও অভাব লেগেই থাকে। মা-বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তাঁরা কোনো কাজ করতে পারেন না।
হাসানের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘ওর চিকিৎসার জন্য ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’
ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, হাসান বা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করলে খোঁজখবর নিয়ে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।