ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছেন বাস শ্রমিকেরা। তাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আঞ্চলিকসহ দূরপাল্লার পথের যাত্রীরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে শহরের পৌর বাস টার্মিনাল, পুরোনো বাস টার্মিনাল ও রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাসসহ যাত্রীবাহী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকেরা লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান করছেন। মাহিন্দা ও সিএনজিচালিত গাড়ি শহরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে শহরে নাজমুল হোসেন (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে মারধর করেন বাস শ্রমিকেরা। সে নগরকান্দা উপজেলা সিএনজিচালক সমিতির সদস্য। এ ঘটনার পর নগরকান্দায় অটোরিকশাচালক সমিতির সদস্যরা ন্যায়বিচারসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বিক্ষোভ করেন এবং সদরপুর, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এর প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যা থেকে আঞ্চলিক সব রুটের বাস চলাচল ও আজ সকাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে বাস শ্রমিক ও মালিকপক্ষ।
নগরকান্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সমিতির সদস্য মতিউর, শেখ জসিম ও বিল্লাল মুন্সি বলেন, ‘ফরিদপুর বাস মালিক সমিতির অত্যাচারে জিম্মি দশায় অটোরিকশাচালকেরা। ফরিদপুর গেলে তারা আমাদের চালকদের মারধর করে। এ ছাড়া বাস মালিক সমিতির কারণে আমাদের সিএনজি-মাহিন্দাসহ ছোট গাড়িগুলোর রোড পারমিট পাচ্ছি না।’
রোড পারমিটসহ বাস মালিক সমিতির জিম্মি দশা ও অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তাঁরা। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা। অপরদিকে বাস শ্রমিক ও নেতারা বলছেন, মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচি চলবে।
নাজমুল হক তারা আরও বলেন, ‘এসব ঘটনা আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের শ্রমিকদের ওপর হামলাকারী ও বাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে এবং আমাদের দাবি না মেনে নেবে, ততক্ষণ সব ধরনের বাস ও সিএনজি-মাহিন্দা চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’
বিষয়টি নিয়ে জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বলেন, ‘সিএনজি ও মাহিন্দাগুলো অবৈধ। সেগুলো রাস্তায় চলবে না। আমরা চলতে দেব না। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’
এদিকে বাস শ্রমিক ও অটোরিকশাচালকদের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাস টার্মিনালে এসে গন্তব্যে যেতে না পেরে কেউ কেউ বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকায় যাচ্ছেন। আবার অনেকে ফিরে গেছেন। পৌর বাস টার্মিনালে ঢাকায় যাওয়ার জন্য আসা দেলোয়ার হোসেন নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ‘ভোগান্তির শেষ নেই। অফিসের একটি কাজে ফরিদপুরে এসেছিলাম। এখন জরুরিভাবে ঢাকায় যেতে হবে। এখন দেখি বাস নেই, এটা খুবই কষ্টের। সঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছাতে না পারলে বসের রাগারাগিও শুনতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান মোল্লার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ফোন দিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াছিন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন।