নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিরপুর থানায় করা একটি হত্যাচেষ্টার মামলায় আদালতে হাজির করা হচ্ছে হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে। মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে মিরপুর থানার এসআই মো. আব্দুল হালিম রিমান্ডের আবেদন করেছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। সুমনকে আদালতে হাজির করার পর ঢাকার যেকোনো মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি হবে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে মিরপুর থানার পুলিশ মিরপুর ৬ নম্বর এলাকা থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে আটক করে। পরে হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার ছাতিয়ইন ইউনিয়নের যুবদলের সহসভাপতি হৃদয় মিয়াকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর হৃদয় মিয়া মিরপুর থানায় এই মামলা করেন। তিনি মিরপুর ১০ নম্বরের একটি হোটেলের সহকারী বাবুর্চি বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
তিনি মামলায় অভিযোগ করেন, গত ১৪ জুলাই থেকে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দিয়ে মিছিল-মিটিং করেন। গত ১৯ জুলাই দুপুরের পর মিরপুর ১০ নম্বর ফলপট্টি গলিতে তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে ছিলেন। বেলা আড়াইটার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিতে তার ডান পায়ের হাঁটুর ওপরের বাটি দুই ভাগ হয়ে যায়। এ সময় পাশের এক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
স্থানীয়রা তাঁকে নিয়ে পাশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বিএনপির নেতা, সে কারণে তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। পরে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। সুস্থ হয়ে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঘটনার দিন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী লোহার রড, হাঁসুয়া, পিস্তল, রামদা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করেন। তাঁদের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ব্যারিস্টার সুমনসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেছেন, ব্যারিস্টার সুমনকে আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি একজন ব্যারিস্টার বিধায় জিজ্ঞাসাবাদে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলেছেন। কৌশলে প্রকৃত ঘটনা এড়িয়ে গেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আবেদনে আরও উল্লেখ করেছেন, গত জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র নির্বাচন করলেও ব্যারিস্টার সুমন আওয়ামী লীগের একজন উদীয়মান নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নে প্রকাশ্যে ও গোপনে তিনি নির্দেশ ও উসকানি দিয়েছেন। প্রকৃত ঘটনা জানতে এবং মামলার এজাহার নামের পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য ব্যারিস্টার সুমনকে রিমান্ডে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।