পুলিশ অফিসার পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি: ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ১৭
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেদের পুলিশ অফিসার পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করছি।’ আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আয়োজিত বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওয়া) অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এরূপ পুলিশ এ দেশের মানুষ দেখতে চাননি। আন্দোলনে হাজার ছাত্র-জনতার মৃত্যু, দুঃখের কাহিনি রচনা করেছে। আমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ। কী কারণে মানুষের এত ক্ষোভ পুলিশের ওপরে? জুলাই-আগস্টের ঘটনা আমাদের সামাজিকভাবে অনেক নিগৃহীত করেছে। এখন পর্যন্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেদের পুলিশ অফিসার পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি।’

সাজ্জাত আলী বলেন, ‘এই ট্রমা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। বের হয়ে আসার জন্য একটাই উপায়-মানুষকে সেবা দিতে হবে। সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই একমাত্র পুলিশের হারানো ইমেজ বা গৌরবকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব, ইনশা আল্লাহ।’

৫ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭২ ঘণ্টা আগেও যদি তখনকার নেতৃত্বে থাকা পুলিশ অফিসাররা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেন, তাহলে অনেকের জীবন রক্ষা হতো। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদেরও জীবন রক্ষা হতো। কিন্তু এরূপ সিদ্ধান্ত তখন নেওয়া হয়নি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিশেষ করে পুলিশে গত ১৫ বছরে যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন তাঁরা কী ভূমিকা রেখেছিলেন, তাঁরা কী কর্মকাণ্ড করলেন যে এ দেশের মানুষ পুলিশের প্রতি এত তিক্ত-বিরক্ত হলো। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ৪৪ জন পুলিশ সদস্যকে জীবন দিতে হলো, শত শত সহকর্মীকে নানাভাবে ক্ষতবিক্ষত হতে হলো। সঙ্গে পুলিশের থানা, ফাঁড়ি, অস্ত্র লুট হয়ে গেল। পুলিশের যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন, তাঁরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না বা নিতে পেরেছেন কি না, সেই বিচারের বিবেচনা আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম।

ঢাকা নগরীর পুলিশপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক অ্যাসোসিয়েশন আছে, আমাদের দুটি আছে। একটি সার্ভিং অফিসারদের, আরেকটি রিটায়ার্ড অফিসারদের। সব অ্যাসোসিয়েশনেই প্রতিযোগিতা, মতপার্থক্য থাকবে। কিন্তু আমি আশা করি সার্ভিং এবং অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসোসিয়েশনের মতপার্থক্য কমিয়ে এনে, নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রেখে এগিয়ে যেতে পারি।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসোসিয়েশন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সেইরূপ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। বিভিন্ন সামাজিক ও বিভিন্ন বিষয়ে এই সংগঠন যেন আরও জোরালো ভূমিকা পালন করে।

বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওয়া) সভাপতি এম আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।