নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীতে নামছে সন্ধ্যা। সেই সন্ধ্যার সবটুকু আকর্ষণ যেন কেড়ে নিল বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তন। দিনভর সুফিবাদ নিয়ে আলাপ শেষে নাদিম কাওয়ালের সুরে সুফি অনুরাগীরা মাতলেন আনন্দধারায়।
ঢাকার বিখ্যাত নাদিম কাওয়াল ও তাঁর দল গেয়ে শোনান একে একে বিখ্যাত শিল্পী নুসরাত ফতেহ আলী খানের ‘আল্লাহু’, মাইজভান্ডারি গান ‘দমে দমে জপ রে মন আল্লাহু’, ‘ও লাল মেরি...মাস্তকালান্দর’, ‘ভরদে জলি মেরি ইয়া মোহাম্মদ’, ‘তাজেদারে হারাম’ ইত্যাদি বিখ্যাত সব গান।
এর আগে সকাল থেকেই ছিল সুফিবাদ নিয়ে আলোচনা-বক্তৃতা। সুফি সংস্কৃতি, সুফিধারা, ঢাকার সুফি, লালন ও ইবনে আরাবি এবং সুফি কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের মার্কস চিন্তক ও উর্দু কবিতার অনুবাদক জাভেদ হুসেন সুফি কবিতা নিয়ে আলাপ করেন।
কবিতায় আশিক ও মাশুকের কত রং কত যে ধরন, সেগুলো নিয়ে আলাপ করেন জাভেদ। তিনি আশিক-মাশুকের সম্পর্ক নিয়ে মির্জা গালিব, মীর ত্বকি মীর, হাফিজ, ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, শাহ দেহলভিসহ সুফি কবিদের কবিতার উদাহরণ দিয়ে কথা বলেন। তাঁর কথায় উঠে আসে, মির্জা গালিব তাঁর কবিতায় সুফি অরেম নিয়ে বলেন, ‘আমি চিঠি লিখব, তার কোনো কারণ নাই। শুধু চিঠি লিখতে গেলেই তোমার নাম লিখতে হবে। তাই চিঠি লিখি। পত্রবাহক আরেকটি চিঠি আনতে আনতে আরেকটি লিখে রাখি। কারণ, আমি জানি তুমি কী লিখবে। তুমি পড়বে না আমি জানি। তাই চিঠির প্রথমে একটি চোখের ছবি এঁকে দিয়েছি। যাতে তুমি বুঝতে পার যে আমি তোমাকে দেখতে চেয়েছি।’
লালন ও ইবনে আরাবি নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ ফেলো ড. গোলাম নবী মজুমদার। আয়োজকদের একজন মীর হুযাইফা আল মামদূহ বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম উৎসবের মতো করে আয়োজনটি করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একাডেমিক এক আলোচনার মধ্য দিয়ে আয়োজনটি হলো। সুফিদের সংস্কৃতির সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বা রাবত করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।’