মানিকগঞ্জের শিবালয়ে এক পুলিশ সদস্যের (প্রেমিকের) বাড়িতে বিয়ের দাবিতে চার দিন ধরে অবস্থান করছেন এক কলেজছাত্রী। উপজেলার উথুলী ইউনিয়নের ধূসর কালীবাড়ি গ্রামের মৃত সাহাজউদ্দিনের ছেলে মো. হাসান আলীর বাড়িতে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অবস্থান করছেন ওই ছাত্রী।
আজ সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসানের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড়। তবে বাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন আশপাশের গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ ওই বাড়িতে মেয়েটিকে দেখার জন্য ভিড় করছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিএ (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্রে দীর্ঘ চার বছর ধরে পুলিশ সদস্য হাসান আলীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে হাসান তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। হাসান নাটোরে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তাঁর কনস্টেবল নম্বর ৯৬৬ বিপি-৯৮১৮২১০৪০২। কিন্তু এখন তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী ওই কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিয়ের কথা বললে হাসান বলে এ বিয়েতে তাঁর মা রাজি নন, আমাকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে ওঠার পরামর্শ দেন। উপায় না দেখে গত ২৮ ডিসেম্বর আমি তাঁর বাড়িতে আসি। পরে তাঁর মা ও পরিবারের লোকজন জানান, হাসান ছুটিতে এলে ৪০ দিন পর সামাজিকভাবে বিয়ে দেওয়া হবে। আমি বাড়ি ফিরে যাই। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও বিয়ের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আমি ফের হাসানের বাড়িতে আসি। কিন্তু হাসানের মা ও বোন বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এখন সে আমাকে বিয়ে না করলে সমাজে আমি আর মুখ দেখাতে পারব না।’
এলাকাবাসী জানান, হাসানের মা ও বোন বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এ বিষয়ে হাসানের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. খবির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে একই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে পুলিশের এই বাড়িতে অবস্থান নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। তখন ৪০ দিনের মধ্যে বিয়ে দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও বিয়ে না হওয়ায় মেয়েটি আবারও অবস্থান নিয়েছে।’
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর এ আল-মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।