দেশের ব্যস্ততম সড়ক টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার বেশ কিছু অংশে ঢেউ খেলছে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টিতে সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাইপাইল-জামগড়া এখন হাঁটুপানির নিচে। সড়ক ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি এখন চরমে।
এদিকে বাইপাইলের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে বাইপাইলের আড়ত ও কাঁচাবাজার। এ জন্য কিছু দোকান খুললেও ক্রেতা দেখা যায়নি। এ অবস্থার জন্য দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন তাঁরা।
সরেজমিন আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় চারিদিক বৃষ্টির পানি থইথই করছে। বাইপাইল স্ট্যান্ড থেকে জামগড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের এ অবস্থা।
বাইপাইলে স্ত্রী, সন্তানসহ বেশ কিছুক্ষণ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি সাইফুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাসে যে উঠব ওতটুকু শুকনো জায়গাও তো নেই। বাধ্য হয়েই ময়লা পানির মধ্যেই নেমে মানুষ বাসে উঠছেন। বৃষ্টির পানি আর ড্রেনের পানি তো একাকার হয়ে গেছে। এই পানিতে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কীভাবে নামি।’
বাইপাইলের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. সোহেল হোসেন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারী বৃষ্টি হলেই তো বাইপাইল ডুবে যায়। কিন্তু রাস্তার দায়িত্ব যাদের, তারা এত বছরেও কিছু করতে পারল না।’
বৃষ্টির মধ্যে কেনাবেচা কেমন হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিতে ডুবে গেছে বাইপাইলের আড়ত ও কাঁচাবাজার। আমরা তো দোকানই খুলতে পারিনি। দুই-একটি যাও দোকান খোলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু কাস্টমার তো নাই। এমনিতেও ব্যবসার অবস্থা ভালো না। এখন যদি ব্যবসা বন্ধই রাখতে হয় তাহলে পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব?’
বাইপাইল পাইকারি ফলের আড়তের সভাপতি আইয়ুব আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাস্তার পানি ঢুকে রাতেই ডুবে গেছে আমাদের আড়ত। আজ আমাদের আড়তের কোনো ব্যবসায়ী কোনো ধরনের বেচাকেনা করতে পারেনি। পণ্যের গাড়ি এসে অপেক্ষা করছে। কিন্তু আনলোড করার সুযোগ নেই।’
আইয়ুব আলী আরও বলেন, ‘সারা বছরই দেখি কাজ করে সড়ক জনপথের লোকজন। কী কাজ করে আল্লাহই জানে। বৃষ্টি বেশি হয়েছে মানলাম, কিন্তু বাইপাইলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেটার কোনো প্রতিকার থাকবে না তা তো হতে পারে না।’
এ বিষয়ে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ, আমরা পাম্পও লাগিয়েছি। সামনের বছর আর এই কষ্ট থাকবে না। মূল ড্রেনের কাজ শুরু হবে দু-এক মাসের মধ্যেই, তখন আর এই সমস্যা থাকবে না।’
মো. শাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘পানি যাওয়ার কোথাও রাস্তা নাই। এর সঙ্গে যোগ হয় ইন্ডাস্ট্রির পানি। যখন বৃষ্টি থাকে না তখনো রাস্তার ওপরে পানি থাকে। আমার লোকেরা চেষ্টা করছে, আমিও সাইট থেকে মাত্রই ঘুরে গেলাম। রাস্তাও ভেঙেটেঙ্গে গেছে, আগামী সপ্তাহেই আমরা ইনশা আল্লাহ রিপেয়ারের কাজ করে ফেলতে পারব, যদি বৃষ্টি না থাকে। বাইপাইল অংশের পানি আজকেই নেমে যাবে, আর ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনের পানি আশা করি কালকের মধ্যেই নেমে যাবে।’