নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপিল বিভাগে মামলা বিচারাধীন অবস্থায় বড় মেয়েকে নিয়ে দেশ ছেড়ে যাওয়ায় জাপানি মা নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন বাবা ইমরান শরীফ।
আজ সোমবার চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এই বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
ওইদিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হবে। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইমরান শরীফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আপিল চলাকালে বড় মেয়েকে নিয়ে যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে–এই মর্মে আবেদন করেছিলাম। তাতে গত ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালত উভয় পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। স্থিতাবস্থা থাকার পরও নাকানো এরিকো বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি। চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে মেঝো মেয়ে লাইলা লিনাকে নিজের জিম্মায় নিতে জাপানি মা নাকানো এরিকো লিভ টু আপিল করেন। পরে তা শুনানির জন্যও আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ। গত ১১ মার্চ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ওই দিন ধার্য করেন।
এদিকে বড় মেয়েকে পেতে পৃথক লিভ টু আপিল করেন বাবা ইমরান শরীফ। তাতে গত ৯ এপিল চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন এবং স্থিতাবস্থা জারি করেন। এখন পৃথক লিভ টু আপিল এবং আদালত অবমাননার আবেদন একসঙ্গে শুনানি হবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে।
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট দুই সন্তানের বিষয়ে রায় দেন। রায়ে বলা হয়, বড় মেয়ে থাকবে মায়ের কাছে। আর বাবার কাছে থাকবে মেঝো মেয়ে। আর জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবা তাদের সন্তানদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশের আদালতে মামলা চললেও ছোট মেয়ে জাপানে তার নানির হেফাজতে আছে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে মেঝো মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন মা নাকানো এরিকো। আর বড় মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে পৃথক লিভ টু আপিল করেন বাবা ইমরান শরীফ।
এর আগে দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব নিয়ে করা মামলায় গত বছরের ২৯ জানুয়ারি রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত। তাতে জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে রায় দেন আদালত।
পরে বাবা ইমরান শরীফ আপিল করলে তা খারিজ করে দেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। এরপর আপিল খারিজের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন ইমরান শরীফ। যার রায় হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি।