নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
র্যাব হেফাজতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার আসামি সুরাইয়া খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় সংস্থাটির ভৈরবের ক্যাম্প কমান্ডার ফাহিম ফয়সালকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে র্যাব সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকজন বদলি হতে পারে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, মামলাটির নান্দাইল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হাসানকেও প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
কমান্ডার ফাহিম ফয়সালকে বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্র ও কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘বদলি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এই ঘটনার সঙ্গে নান্দাইলের ওই নারীর মৃত্যুর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে র্যাবের ভৈরব ক্যাম্পে সুরাইয়া খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনি তার পুত্রবধূ রেখা আক্তার হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল। র্যাব হেফাজতে মৃত্যুর দুদিনের মাথায় ওই ক্যাম্পের কমান্ডারকে বদলি করা হলো। এই ঘটনায় ওই ক্যাম্পের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হতে পারে।
এদিকে, রেখা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নান্দাইল থানা-পুলিশের এসআই নাজমুল হাসানকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ জানান, ‘এসআই নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার নয়, পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে।’
নান্দাইলে গৃহবধূ রেখা আক্তার (২০) মৃত্যু মামলার আসামি তাঁর শ্বশুর আজিজুল ইসলাম ও শাশুড়ি স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই নাজমুল হাসান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই আসামিকে নান্দাইল মডেল থানায় ডেকে নেন এসআই নাজমুল। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কিছুক্ষণ পরে তাঁদের ছেড়ে দেন।
থানার সামনে আসতেই র্যাবের একটি দল সুরাইয়াকে আটক করে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এরপর শুক্রবার সকালে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়া খাতুনকে মৃত ঘোষণা করে।
এ মৃত্যুর ঘটনায় সুরাইয়া খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম র্যাবের হেফাজতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে ১২ ঘণ্টা পরে মরদেহের সুরতহাল করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে। এদিকে শনিবার দুপুরে সুরাইয়া খাতুনের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয় উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামে।