গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানা এলাকায় শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পুলিশ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবককে আদালতে নেওয়া হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
নিহত শিশুর নাম নুপুর আক্তার (৮)। সে গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানাধীন মাজুখান (বাঘেরটেক) এলাকার আবুল হোসেনের মেয়ে। স্থানীয় হলি কোরআন মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল নুপুর। তার বাবা আবুল হোসেন (৪৫) পেশায় রাজমিস্ত্রি।
গ্রেপ্তার আসামি হলেন মো. আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহ (২০)। তিনি বাঘেরহাট জেলার মোল্লারহাট থানার কাচনা গ্রামের আব্দুল আলীম ফকিরের ছেলে। মহানগরীর পুবাইল থানাধীন মাজুখান পশ্চিমপাড়া এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন আব্দুল্লাহ।
মামলার এজাহার ও স্থানীয়রা বলছে, শিশু নুপুর আক্তার গত বুধবার দুপুর ১টার দিকে আইসক্রিম কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পরেও বাসায় না ফেরায় পরিবারের লোকজন আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মাজুখান সাকিনের বাঘেরটেক এলাকার একটি ডোবার পানিতে ভাসমান অবস্থায় নুপুরের লাশ দেখতে পায়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় শুক্রবার নিহত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পুবাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জিএমপির পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, মামলা দায়েরর পর পুবাইল থানার পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত মো. আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহকে শনিবার ভোরে পুবাইল থানাধীন মাজুখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামি স্বীকার করেন যে, ঘটনার দিন বেলা ২টার দিকে নুপুর আক্তার, প্রতিবেশী আরেকটি মেয়ে (১৩) ও আসামি আব্দুল্লাহ সবাই বাসার পাশের ডোবার পানিতে গোসল করতে নামে। পরে প্রতিবেশী মেয়েটি গোসল শেষে নিজ বাসায় চলে যায়। কিন্তু আসামি আব্দুল্লাহ ও নুপুর আক্তার ডোবার পানিতে গোসল করতে থাকে। এ সময় আশপাশ নির্জন হওয়ায় গোসল করার একপর্যায়ে আসামি আব্দুল্লাহ নুপুর আক্তারকে ডোবার পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় ডোবার অপর প্রান্তে মানুষ চলাচলের সাড়াশব্দ পাওয়ায় আব্দুল্লাহ নুপুর আক্তারকে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। পরদিন নুপুর আক্তারের মরদেহ ডোবার পানিতে ভেসে ওঠে।’
তিনি জানান, গতকাল শনিবার আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালতে আসামি আব্দুল্লাহ ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাঁকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।