কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণার পর আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার রাজপথে গণপরিবহন খুব একটা দেখা যায়নি। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। গণপরিবহন দুই একটা থাকলেও রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত অন্যান্য গাড়ির আধিক্য দেখা গেছে সড়কে।
রাজধানীর কাজীপাড়া থেকে আগারগাঁও হয়ে বিজয় সরণি পর্যন্ত গণপরিবহন খুব একটা দেখা যায়নি। একই অবস্থা তেজগাঁও ফ্লাইওভার ও মগবাজার ফ্লাইওভার হয়ে কাকরাইলে যাওয়ার পথেও। গণপরিবহন দুই-চারটা দেখা গেলেও ব্যক্তিগত গাড়ির দেখে মিলেছে বেশি। এ সময় এই রুটের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীদের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
আবার কাকরাইল থেকে শান্তিনগর-মালিবাগ হয়ে রামপুরা পর্যন্তও প্রায় একই ধরনের চিত্রের দেখা মেলে। তবে এই রুটে সকাল সাড়ে আটটার আগে বেশ কিছু বিআরটিসির বাস চলতে দেখা গেছে। সরেজমিনে এই প্রতিবেদক খেয়াল করলে দেখা যায়, বিআরটিসির এসব বাস মূলত সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের বহনের জন্য রাস্তায় নেমেছে।
শান্তিনগর থেকে রামপুরাগামী বেসরকারি চাকরিজীবী পুনম যাবেন গুলশান ২-এ। তিনি বলেন, ‘শাটডাউনের কথা ভেবে একটু আগেভাগেই বাসা থেকে বের হয়েছি। অফিসে উপস্থিত হতে হবে ৯টার মধ্যে। কিন্তু রাস্তায় বের হয়ে দেখি গণপরিবহন খুব একটা নেই। কখন গাড়ি আসবে কে জানে। যা-ও দুই-চারটা গাড়ি আসছে, তাতে ওঠার জো নেই। মানুষে ভর্তি।’ অবশ্য কিছুক্ষণ পর তিনি একটি বাসে উঠে চলে যেতে সক্ষম হন।
কাজীপাড়া থেকে রামপুরায় আসা ফারুক জানান, তিনি সাধারণত মোটরসাইকেলযোগে প্রতিদিন অফিস আসেন। কিন্তু শাটডাউনে রাজধানীর পরিস্থিতি কেমন হয়, সেটা ভেবেই আজ বাইক নিয়ে বের হতে পারেননি। এসেছেন ভেঙে ভেঙে। বাসে করে কারওয়ান বাজার এসে সেখান থেকে সিএনজিযোগে এসেছেন রামপুরায়।
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দেওয়া ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ আসছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েতউল্লাহ। বুধবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গাড়ি বন্ধ করিনি। গাড়ি চলার নির্দেশ আছে।’ তিনি বলেন, ‘যদি রাস্তার অবস্থা ভালো থাকে তবে গাড়ি চলবে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তখন দেখা যাবে। তখন বন্ধ থাকতে পারে।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না।