সাভারের আশুলিয়ায় একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে শিশু সন্তানসহ দম্পতি দগ্ধের ঘটনায় গৃহকর্তা জাহাঙ্গীর কবির (৩৪) মারা গেছেন।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি জানান, জাহাঙ্গীরের শ্বাসনালিসহ শরীরের ৯১ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আশঙ্কাজনক হওয়ায় গতকালই তাঁকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছিল। মধ্য রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
ডা. শাওন আরও জানান, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী বিউটি পারভিন (২৮) ৩৩ শতাংশ ও মেয়ে তাসফিয়া জান্নাত তাহার (৭) শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ। তাঁদের শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগে, গতকাল রোববার সকাল ৬টার দিকে আশুলিয়ার জিরাবো চালাবাজার এলাকায় সোহাগ মণ্ডলের বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ জাহাঙ্গীরের সহকর্মী হাসিব মাহমুদ জানান, জাহাঙ্গীর জিরাবোতে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সিনিয়র অপারেটর ছিলেন। তাঁর স্ত্রী স্থানীয় জুতা, ব্যাগ তৈরি কারখানায় চাকরি করেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে তাহা একটি মাদ্রাসায় পড়ে।
তিনি জানান, ৩ তলা বাড়িটির নিচ তলায় ভাড়া থাকে পরিবারটি। সহকর্মী হাসিবও পাশের বাসায় থাকেন। রোববার সকাল ৬টার দিকে বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। এরপর জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে কান্না ও চিৎকার শুনতে পান। দৌড়ে গিয়ে দেখেন, জাহাঙ্গীর ও তাঁর স্ত্রী শরীর ঝলসানো অবস্থায় বাসার বাইরে দাঁড়িয়ে ছটফট করছেন। তাঁদের শিশুটিকে এর আগেই স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসিব দম্পতিকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তিনজনকেই ঢাকায় নিয়ে আসেন তিনি।
পরিবারটির বরাত দিয়ে হাসিব জানান, সকালে ঘুম থেকে ওঠে বিউটি বাথরুমে যান। আর জাহাঙ্গীর গরম পানি বা নাশতার জন্য রান্নাঘরে গিয়ে চুলা জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে।