হোম > সারা দেশ > ঢাকা

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ২৬ দিন ধরে অনুপস্থিত তত্ত্বাবধায়ক ও ৩ সিনিয়র নার্স

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও তিন সিনিয়র নার্স গত ২৬ দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তাঁরা পলাতক রয়েছেন। তত্ত্বাবধায়কের দাবি, তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতাল আসছেন না। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, সদর হাসপাতালে নানা অনিয়ম এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় জনরোষের আশঙ্কায় তাঁরা কর্মস্থলে আসছেন না। 

হাসপাতালে না আসা কর্মকর্তা ও নার্সরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন, হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ জান্নাত আরা শিমুল, সিনিয়র নার্স সাইফুল ইসলাম এবং সহকারী নার্স মোতালেব হোসেন। 

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে এখনো অনুপস্থিত রয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। তাঁর স্থলে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার ডা. মো. বদরুল আলম চৌধুরী। একই সময় থেকে পলাতক রয়েছেন হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ জান্নাত আরা শিমুল, সিনিয়র নার্স সাইফুল ইসলাম এবং সহকারী নার্স মোতালেব হোসেন। 

গত ৫ তারিখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের খবর মিডিয়ায় প্রচারের পর জনরোষের আশঙ্কায় হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায় ডাক্তার বাহাউদ্দীন ও তিন নার্স। এরপর থেকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মোবাইল নম্বর খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে নার্সদের মোবাইল নম্বর। হাসপাতালের পক্ষ থেকে অনেক যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। 

হাসপাতালের কর্মরত নার্স ও স্থানীয়রা ভুক্তভোগীরা জানান, ডা. বাহাউদ্দীনের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায় হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নাম ভাঙিয়ে হাসপাতালের দলীয় অনুসারী সিনিয়র নার্স জান্নাত আরা শিমুল, সাইফুল ইসলাম ও মোতালেব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিলেন। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ আউটসোর্সিংয়ে কর্মরতা এবং রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করতেন তাঁরা। চাকরি থেকে সরানোর ভয় দেখিয়ে সবাইকে চাপে রাখতেন। 

এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের তিন সিনিয়র নার্সের মোবাইল ফোনে নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

তবে অনুপস্থিত থাকা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বাহাউদ্দীন অনিয়ম দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও ভয়ে নয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আমার অর্জিত ছুটির দরখাস্ত করা আছে। আমার পায়ের ব্যথা এবং প্রেশারের কারণে শারীরিক অসুস্থতার ছুটি নিয়েছিলাম। সামনের সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমার ছুটি বলবৎ আছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আমি আগামীকাল রোববার অফিস করব।’ 

অনিয়মের বিষয়গুলো তিনি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম করিনি। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে আমার কাছে এসে জানাক, অথবা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলতে পারে।’ 

নার্সদের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনজন নার্সের অনুপস্থিত থাকার কথা জানতে পেরে তাদের শোকজ করা হয়েছে। তবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। যেহেতু নার্সদের ডিপার্টমেন্ট ভিন্ন সুতরাং পরবর্তী পদক্ষেপ নার্সিং অধিদপ্তর থেকে নেওয়া হবে। 
 
সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার আনিছুর রহমান ভূইয়া বলেন, ‘গত পাঁচ তারিখ থেকে আমাদের তিনজন নার্স (ওটি ইনচার্জ জান্নাত আরা শিমুল, সাইফুল ইসলাম ও মোতালেব হোসেন) অনুপস্থিত রয়েছে। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ককে অবগত করেছি।’ 

তিনি বলেন, ‘এক মাস পর্যন্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক যেকোনো সেবিকাদের ছুটি দিতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। এক মাস পাড় হয়ে গেলে সেটা আর লোকাল অথরিটির কাছে থাকে না। সেটা চলে যায় নার্সিং অধিদপ্তরের কাছে। অনুপস্থিত যারা আছেন তাদের সময় এক মাস পাড় হয়ে গেলে আমরা বিষয়টি নার্সিং অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানাব।’ 

সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. বদরুল আলম চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অনুপস্থিত থাকলে আর্থিক সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অনেক কার্যক্রম আছে সেগুলোতে অর্থের প্রয়োজন হয়, সেগুলো পরিচালনা করা যায় না। বিভিন্ন সেক্টরের বিভিন্ন সরবরাহ চাওয়ার জন্য বড় বড় সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় না। হাসপাতালের দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। অবৈধভাবে বিনা ছুটিতে থাকলে মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শোকজ করা হবে। কেন অনুপস্থিত এই উত্তর তাকেই (তত্ত্বাবধায়ক) দিতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘অন্য সব সেক্টরের মতো স্বাস্থ্য সেক্টরকে তারা অবহেলিত রেখেছিলেন। মানুষের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল না। ওই সময়ে অন্য ডাক্তার নার্সরাতো পালায়নি। তারা কেন পালিয়ে গেল। তারা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেছে তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য, তাদের ভুলের জন্য।’ 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মকছেদুল মোমিন বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অনুপস্থিতের কথা জেনে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন উনি ছুটিতে আছেন। ওনাকে ছুটি দিতে পারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক। এখন উনি কত দিনের ছুটি পেয়েছেন অথবা উনি কত দিনের ছুটি নিয়েছেন সেটা তারা বলতে পারবেন।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সদর হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম চলমান আছে। যদি তত্ত্বাবধায়ক ছুটি শেষে ফিরে আসে তাহলে তার কাজ তিনি করবেন। অথবা তার পরিবর্তে যদি কাউকে ক্ষমতা দেওয়া হয় তাহলে তিনি আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’

কবি নজরুলের নাতির চিকিৎসায় বার্ন ইনস্টিটিউটে মেডিকেল বোর্ড

নগরকান্দায় ঢাল-সড়কি নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ২০

শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন এলিফ্যান্ট রোডের হামলায় জড়িত নন, মায়ের দাবি

রাজধানীর হাজারীবাগে ইডেন কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

কবি নজরুলের নাতি বাবুল কাজী অগ্নিদগ্ধ, অবস্থা আশঙ্কাজনক

ছবিতে হারানো দিনের ঢাকা

বিয়ে করলেন সোহেল তাজ

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে আটক হলেন ছাত্রদল নেতাও

মাটিতে মিশে যাচ্ছে ১১ গাড়ি, যন্ত্রাংশ চুরি

জাবি ছাত্রদলের সদস্যসচিবের ওপর হামলা চেষ্টা, ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

সেকশন