ইতালির ওয়ার্ক পারমিট (নুলাওস্তা) ভিসা জটিলতা নিয়ে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছেন ভিসাপ্রত্যাশীরা। আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তাঁরা বলেন, আবেদনের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অনেক বাংলাদেশি এখনো ভিসা হাতে পাননি। ২০২২ সালে কাজের অনুমতি পেলেও বহু আবেদনকারী সাক্ষাৎকারের ডাক না পাওয়ায় এবং কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। বিষয়টির দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়ে বড় কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ২০২২ সালের শেষের দিকে ইতালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদনের পর ২০২৩ সালের শুরু থেকে ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে কাগজপত্র জমা দেন তাঁরা। তবে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ আবেদন নিষ্পত্তি হয়নি। অনেকে সাক্ষাৎকারের জন্য অপেক্ষায় আছেন, কেউ আবার আবেদন জমা দেওয়ার সুযোগই পাননি।
তাঁদের দাবি, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে জমা পড়া আবেদনগুলো এখনো পর্যন্ত সিরিয়াল অনুযায়ী প্রসেস হয়নি। ভিসা আবেদন দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে গিয়ে চাকরি ও জীবনের সুযোগ হারাচ্ছেন অনেকেই। ইতিমধ্যে অনেক দেশ তাদের কর্মী নির্বাচন করে প্রক্রিয়া শেষ করলেও বাংলাদেশে এখনো ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
তাঁরা বলেন, একেকজন প্রায় ৪০ হাজার ইউরো পর্যন্ত খরচ করে ভিসার প্রক্রিয়া শুরু করলেও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। এ অবস্থায় ২০২৫ সালে ইতালিতে নতুন কোটা চালু হলে পুরোনো আবেদনকারীরা আরও পিছিয়ে পড়বেন।
ভুক্তভোগীদের দাবি, বিষয়টি দ্রুত সমাধানে সরকারকে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজন হলে ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পুরোনো আবেদন নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আরমান আহমেদ নামের এক আবেদনকারী বলেন, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবেদন করেও এখনো কোনো খবর পাইনি। চাকরি চলে যাচ্ছে, মনেও হচ্ছে, সব হারিয়ে ফেলব।
আরেকজন আবেদনকারী সাগর হোসেন বলেন, আমি পরিবার ও স্বজনদের সবকিছু বিক্রি করে এই সুযোগ পেয়েছি। এখন যদি ভিসা না পাই, তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সাল থেকে নতুন ফ্লুসি কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে, যা নতুনদের জন্য সুযোগ তৈরি করবে। কিন্তু পুরোনো আবেদনকারীরা যদি এখন বাদ পড়ে যান, তাহলে তাঁদের বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
গত ১৬ মার্চ ভিসা জটিলতা নিরসন চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন ভিসাপ্রত্যাশীরা। এ বিষয়ে আজ মানববন্ধন শেষে তাদের মধ্যে পাঁচজন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যান। তবে সেখান থেকে ফিরে আসতে হয় তাঁদের।