ঘরের খাটের নিচে সাত দিন ধরে পড়ে ছিল মরদেহ। মরদেহের গন্ধ বের হলেও স্বাভাবিকভাবে রান্না করে খাওয়াদাওয়া করতেন মা-বোন। আজ রোববার ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মিয়াপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে ঝুমা আক্তার (৩৫) নামের এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর এসব কথা জানায় পুলিশ। তবে মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি।
মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝুমার মা মনোয়ারা বেগম (৫৫) এবং ছোট বোন সুমা আক্তারকে (২৭) থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
ঝুমা আক্তার ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল মৃত আব্দুল আহাদ তালুকদারের বড় মেয়ে। চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়।
জানা যায়, আব্দুল আহাদ তালুকদারের চার চালা টিনের ঘরের একটি খাটের নিচে ছিল ঝুমা আক্তারের মরদেহ। বাড়িতে মা ও দুই বোন থাকতেন। বাকি দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই পুলিশে চাকরি করেন। আজ রোববার সকালে ঘর থেকে লাশের দুর্গন্ধ পান এলাকাবাসী। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে খবর দেন তাঁরা। বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল জানান, ঘরের ভেতর থেকে লাশের দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। চার চালা টিনের ঘরের একটি খাটের নিচ থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘মৃতদেহটি আনুমানিক সাত দিনের পুরোনো। গন্ধ বের হওয়ার পরও ঝুমার মা ও বোন ওই বাড়িতে বসবাস করতেন রান্না করতেন, খাবার খেতেন। পুলিশ যখন বাড়ির ওই কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করে তখন ঝুমার মা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝুমার মা মনোয়ারা বেগম ও ছোট বোন সুমা আক্তার আটক করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি।’
সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে মৃতের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’