মাদারীপুর প্রতিনিধি
একই বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থেকে তাঁদের সেবা-যত্ন করায় সম্মাননা পেয়েছেন ১২ পুত্রবধূ। ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় মাদারীপুরে।
আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) মাদারীপুর সমন্বিত সরকারি অফিস ভবনের জেলা শিশু একাডেমি হলরুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘পাশে আছি মাদারীপুর’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সম্মাননা পেয়ে আনন্দিত পুত্রবধূরা।
সেরা পুত্রবধূরা হলেন—আয়েশা সিদ্দিকা আকাশী, মরিয়ম অহিদ, রাবেয়া আক্তার মুক্তা, রিমা, সুরাইয়া আক্তার, সামসুন নাহার, আরিফা আফরোজ অন্তরা, সুলতানা রাজিয়া, ফারজানা, আছমা খাতুন, সাবিকুন্নাহার আক্তার ও লাবণী আক্তার আশা।
আয়োজক সংগঠন সূত্র জানায়, সম্মাননা পাওয়ার শর্তের মধ্যে ছিল শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে একই বাড়িতে থেকে তাঁদের সেবা-যত্ন করা। ফরম পূরণের মাধ্যমের প্রাথমিক বাছাই পর্বে ২৩ জন পুত্রবধূ মনোনীত হন। পরবর্তীতে সেখান থেকে ১২ জন মনোনীত হন। সে ক্ষেত্রে সংগঠন থেকে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে এই ১২ পুত্রবধূকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদারীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম মুন্সী, আবৃত্তি সংগঠন মাত্রা’র সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন লিটন, নিরাপদ চিকিৎসা চাই’র মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি মশিউর রহমান পারভেজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘পাশে আছি মাদারীপুর’র প্রতিষ্ঠাতা বায়জীদ মিয়া।
আয়োজক বায়জীদ মিয়া বলেন, বর্তমানে আমাদের সমাজে পরিবারগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। আবহমান বাংলার যে ঐতিহ্য একান্নবর্তী পরিবার সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই এই বিশেষ সম্মাননা পুরস্কারের আয়োজন করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটি মাদারীপুরের ২৩ জন পুত্রবধূর মধ্যে থেকে সেরা ১২ জন পুত্রবধূকে মনোনীত করেন। আজ এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই সেরা ১২ পুত্রবধূকে সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
সম্মাননা পাওয়া লাবণী আক্তার আশা বলেন, ‘এ সম্মাননা পেয়ে আনন্দিত আমরা। ভবিষ্যতে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সবার প্রতি আরও যত্নবান হব। এ পুরস্কারপ্রাপ্তি দেখে সমাজের অন্য গৃহবধূরাও অনুপ্রাণিত হবেন বলে আশা করছি।’
সেরা পুত্রবধূ সামসুন নাহারের শাশুড়ি শামীমা বেগম বলেন, ‘বর্তমান সমাজে এমন আয়োজনের দরকার আছে। কারণ বর্তমানে কেউ শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে একসঙ্গে থাকতে চান না। এই আয়োজন দেখে পুত্রবধূরা শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করবেন, যত্ন নেবেন, একসঙ্গে থাকবেন বলে আশা করছি।’
সম্মাননা পাওয়া অন্তরার শ্বশুর কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সংসার শুধু পুত্রবধূদের একার দায়িত্ব না; শ্বশুর, শাশুড়ি, পুত্রবধূ, ছেলে সবাই মিলেমিশে যে যাঁর অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করাই হচ্ছে সবার কর্তব্য।’