মাহিদুল ইসলাম মাহি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে মৎস্য সম্পদকে ধ্বংস করতে পদ্মা নদীসহ খাল বিলে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘চায়না দোয়ারি’ নামের বিশেষ এক ধরনের জাল। সেই জালে নির্বিচারে মারা পড়ছে পোনাসহ সব ধরনের মাছ। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এই এলাকার মৎস্য সম্পদ।
সরেজমিন পদ্মা নদীসহ ভাতছালা, দিয়ারবিল ও গোপীনাথপুর বিলে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য বাঁশের খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে আর খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে চায়না দোয়ারি জাল। কমপক্ষে ৮০ ফুট লম্বা একেকটি ফাঁদ।
এদিকে উপজেলার বয়রা, হারুকান্দি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮ কি.মি এলাকায় পদ্মাপাড় রক্ষাবাধ রয়েছে। এ বাঁধের আন্ধারমানিক খালপাড় বয়রা, দাশকান্দি বয়রা, দড়িকান্দি, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বকচর, আলগীচর, জগনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর, হারুকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর, হারুকান্দি এলাকার কয়েকটি জায়গায় জিও ব্যাগ কেটে চায়না দোয়ারি (জাল) বেঁধে রাখা হয়েছে। জিও ব্যাগে বাঁশ দিয়ে গর্ত করে ফেলানো হয়েছে এসব জাল। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধ।
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বিল্টু মিয়া নামের এক মৎস্য শিকারি বলেন, ‘আমি চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরি না। বাঁশের তৈরি দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরি। আমি পদ্মায় দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরি। মাঝে মাঝে বিলেও ধরি। আমাদের গোপীনাথপুর বিলে ৮০ ভাগ জেলে চায়না দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরে।’
চালা ইউনিয়নের হারেস নামের এক মৎস্য শিকারি বলেন, ভাতছালা বিলে শতকরা ৯০ ভাগ মৎস্য শিকারি চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরেন।
চালা ইউনিয়নের সট্টি গ্রামের কালাম দেওয়ান বলেন, ‘পুরো ভাতছালা বিলে হাজার হাজার জাল পেতে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট পোনা ধরছে তাঁরা। আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকেও জানিয়েছি।’
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘চায়না দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে আমার ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের বেড়ি বাধেরও ক্ষতি করছে মৎস্য শিকারিরা। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ধূলসুরা এলাকায় কয়েক দিন আগে ১ হাজার মিটার চায়না জাল ধ্বংস করেছি। কারেন্ট জাল এবং চায়না জালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।