গাজীপুরের শ্রীপুরে সংরক্ষিত ঘন বনাঞ্চলে ঘেরা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্ট। বন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বন আইন অমান্য করে নিজের মালিকানা জমি দাবি করে রিসোর্টের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। ঘন শাল-গজারি বনের চারপাশে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী সীমানাপ্রাচীর। দ্রুত সময়ের মধ্যে মাপজোখ করে অবৈধ সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। স্থানীয় বিট কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থাকলেও বন বিভাগের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণ না করে এ ধরনের কটেজ নির্মাণ নিয়মবহির্ভূত।
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, চারপাশে বন বিভাগের জমি থাকলেও রিসোর্টের জায়গা তাদের। সীমানা নির্ধারণের আবেদন করে কাজ চালানো হয়েছে।
শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখামাইর বিটের আওতাধীন ঘন শাল-গজারি বনের বিস্তৃত এলাকার মাঝখানে গড়ে তোলা হয়েছে রেইন ফরেস্ট ইকো রিসোর্ট। কাঁটাতারসহ অস্থায়ী সীমানাপ্রাচীর দিয়ে জায়গাটি ঘিরে ভেতরে ইতিমধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট-বড় কটেজ, সুইমিংপুল ও শিশুপার্ক। রিসোর্টে যাওয়ার জন্য সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে বানানো হয়েছে রাস্তা। রিসোর্ট নির্মাণের মালপত্র ভারী যানবাহনে করে নেওয়ার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংরক্ষিত বনের অনেক গাছ।
ওই কর্মকর্তা জানান, রিসোর্টের কাজ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে করা হলেও চারপাশে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে যে রাস্তা ব্যবহার করছে, তা দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে।
রেইন ফরেস্ট ইকো রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মো. আশিক বলেন, ‘রেইন ফরেস্ট ইকো রিসোর্টের মালিক টিপু সুলতান। আমি রিসোর্টের সার্বিক বিষয়টি দেখভাল করে থাকি। রিসোর্টের জায়গা আমাদের মালিকানাধীন। সীমানা নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কাছে আবেদন করা হয়েছে। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বনভূমির রাস্তা ব্যবহার করবে না। আমরা আমাদের জমিতে কটেজ নির্মাণ করছি। আমরা বন বিভাগের ১ শতাংশ জমিও ব্যবহার করছি না।’
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, সংরক্ষিত বনের ভেতরে রিসোর্ট নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাকে। বনভূমির মাঝখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির সীমানা নির্ধারণের আবেদন করেই সেখানে রিসোর্টের কাজ শুরু করাটা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না। চারপাশে যেহেতু বনভূমি, সে জন্য বন বিভাগ সীমানা নির্ধারণের অনুমতি দেবে না। সংরক্ষিত বনভূমির ভেতর দিয়ে কোনো ধরনের রাস্তা ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।