রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিং এলাকায় সিজারের (কাচি) আঘাতে আহত আয়েশা সিদ্দিকি (২২) নামের এক গার্মেন্টসকর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে মারা যায়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি আব্দুল লতিফ। ওসি জানান, ভোরে নবোদয় হাউজিং এলাকায় সিজারের আঘাতে আহত হয় ওই নারী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে মারা গেছে।
এর আগে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) ভোর সারে ৬টার দিকে নবোদয় হাউজিং বাজারের পাশে ঘটনাটটি ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
আহত আয়েশার বোন খালেদা আক্তার জানান, তাদের বাসা আদাবর নবীনগর হাউজিং এলাকায়। আয়েশা মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে সাইনেষ্ট গ্রুপ গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। স্বামী রুবেল ঢাকা উদ্যানে ইলেকট্রিকের কাজ করে। তাদের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায়।
খালেদা আরও জানায়, আজ আয়েশার গার্মেন্টস খোলা ছিল। স্বামীও কাজে ছিলেন। ভোরে বাসায় রান্না করে স্বামীকে ভাত দিয়ে গার্মেন্টসে যাওয়ার কথা ছিল। পরে জানতে পারি কে বা কারা রিকশা থেকে নামিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে।
খালেদা আরও জানান, পরে তাঁর চিৎকারে এলাকার কয়েকজন ছুটে আসলে একজন পালিয়ে গেলেও আরেকজনকে ধরে ফেলে। পরে খবর পেয়ে আয়েশাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
আহত আয়েশা জানিয়েছিল আমি বাসার সামনে থেকে রিকশা নিয়ে ঢাকা উদ্যান হয়ে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে গার্মেন্টসে যাচ্ছিলাম। পথে নবোদয় হাউজিং বাজারের কাছে আসলে দুই ব্যক্তি রিকশা থেকে নামিয়ে একজন ধরে রাখে আরেকজন সিজার (কেচি) দিয়ে পেছনে আঘাত করে। পরে চিৎকার করলে এলাকার লোকজন এসে একজনকে ধরে ফেলে, আরেকজন পালিয়ে যায়। তাদেরকে আমি চিনতে পারি নাই। তবে আমার কাছ থেকে কিছুই নেয়নি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) আব্দুল খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, আহত আয়েশার পিঠে তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।
মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ জানায়, ভোরে নবোদয় হাউজিং এলাকায় দুই ব্যক্তি এক গার্মেন্টস কর্মীকে সিজার দিয়ে আঘাত করেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় সেপুল (৩০) নামের একজনকে এলাকার লোকজন ধরে থানায় সোপর্দ করে। সে একজন ট্রাক ড্রাইভার। আটক সেপুল জানায়, তাঁর নিজের বউ তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ঘটনার মৃত নারী ও তাঁর বউ বোরকা পরে যাচ্ছিল। নিজের বউ মনে করে ওই গার্মেন্টসকর্মী আঘাত করে।
ওসি জানায় আহত গার্মেন্টসকর্মী বিকেলে হাসপাতালে মারা গেছে। স্বজনরাও হাসপাতালে আছে। স্বজনরা থানায় আসলে হত্যা মামলা করা হবে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।