কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলার পর প্রতিবারই টাকার সঙ্গে নানা ধরনের চিঠি ও চিরকুট পাওয়া যায়। এগুলোতে মানুষের অনেক আকুতি ও প্রার্থনা লেখা থাকে। আজ শনিবারও দানবাক্স খুলে অনেক চিঠি-চিরকুট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী।
একটি চিরকুটে লেখা, ‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’। এতে মূলত ব্যঙ্গ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আরেকটি চিরকুটে সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও ৫ বছর চাই।’
আজ সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। ১১টি বাক্সে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা। সেই সঙ্গে মিলেছে বিদেশি মুদ্রাসহ নানা অলংকার। অলংকারের পরিমাণ পাঁচ কেজি হবে বলে ধারণা করছেন প্রশাসনের লোকজন। অন্যদিকে টাকা গণনার কাজ চলছে। গণনা শেষ হতে রাত হয়ে যেতে পারে।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আক্তারের তত্ত্বাবধানে সকালে বাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক সকাল ৯টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, পাগলা মসজিদে দানের টাকা রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়। বিভিন্ন দান-অনুদান দেওয়ার পর মসজিদের ব্যাংকের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা আছে। এ টাকা দিয়ে মসজিদের জায়গা সম্প্রসারণ করা হবে। বর্তমানে মসজিদের যতটুকু জায়গা আছে, ততটুকুর নামজারি করা হয়েছে। জায়গা সম্প্রসারণের পর সেখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামিক কমপ্লেক্স স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে, এই মসজিদে দান করলে মনের আশা পূরণ হয়। এ কারণে তাঁরা টাকাপয়সা ও অলংকার নিয়ে ছুটে আসেন এই মসজিদে। মুসলমান ছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনও দান করে থাকেন।
সাধারণত তিন মাস পরপর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৪ মাস ১২ দিন পর খোলা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদটির ৯টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। বস্তার হিসেবে গতবারের চেয়ে এবার এক বস্তা টাকা কম পাওয়া গেছে। তবে কমিটির লোকজন ধারণা করছেন, এবারও টাকার পরিমাণ ৮ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
আরও খবর পড়ুন: