গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যুবকের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়িকে ঘুমন্ত অবস্থায় ভেতরে আটকে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার উপজেলার রতনপুর এলাকার এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (২২) এবং রাতে শাশুড়ি ফুলজান বেগমের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের বাড়ি নাটোর সদরের লক্ষ্মীপুরা এলাকায়।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা সদরের তানভীর আহাম্মেদের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে নাটোর সদরের লক্ষ্মীপুরা এলাকার মুকুল আলীর মেয়ে মোর্শেদা বেগমের বিয়ে হয়। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী বেকার ছিলেন। মোর্শেদার মা ফুলজান বেগম একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তাঁরা সবাই উপজেলার রতনপুর এলাকায় মো. পারভেজের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে কয়েক মাস ধরে তানভীর তাঁদের সঙ্গে থাকতেন না।
তিন দিন আগে মোর্শেদা বেগম তাঁকে তালাক দেন। এ খবরে তানভীর ক্ষুব্ধ হয়ে গত বুধবার রাতে ওই বাড়িতে গিয়ে ঘরের জানালা দিয়ে ঘুমন্ত সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়ির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁরা যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন, সে জন্য বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান। এ সময় চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোর্শেদাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে ফুলজান বেগমও মারা যান।
বাড়ির মালিক মো. পারভেজ বলেন, ‘আমরা তিনতলায় থাকি, তারা থাকে টিনশেড রুমে। চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি দুজন দগ্ধ হয়েছে। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দগ্ধ অবস্থায় চিৎকার করে মোর্শেদা বারবার বলছিলেন, “আমার স্বামী আগুন দিয়েছে। আমার মাকে বাঁচান আপনারা। ”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মোর্শেদা বেগম ও রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মা ফুলজান বেগম মারা যান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তানভীর তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছেন।’
ওসি আরও বলেন, নিহতদের মধ্যে মোর্শেদার সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।