বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শরীয়তপুর জেলা কার্যালয়ের উপ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনকে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বিসিক শরীয়তপুর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ঘুষের টাকা সহ তাঁকে আটক করা হয়।
বিসিক কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন সমন্বিত মাদারীপুর জেলা দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান ও সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামানসহ দুদকের একটি দল। এ অভিযানে সহযোগিতা করে পালং মডেল থানা-পুলিশ।
দুদকের সমন্বিত মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসকেন্দার ঢালী নামে এক ব্যবসায়ী দুদকের সমন্বিত মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর আত্মীয় আবুল কালাম ঢালী মেসার্স ঢালী মিনারেল ওয়াটার নামে শরীয়তপুর বিসিক শিল্প নগরীতে ২০০৯ সালে ৪৫০০ বর্গফুটের একটি প্লট বরাদ্দ পান। আবুল কালাম ঢালী প্রবাসে থাকায় তিনি ওই প্লট পরিচালনার জন্য এসকেন্দার ঢালীকে ক্ষমতা প্রদান করেন। ক্ষমতাপ্রাপ্ত এসকেন্দার ঢালী উক্ত প্রকল্পের নাম ও উপখাত পরিবর্তনের জন্য বিসিক শরীয়তপুর জেলা কার্যালয়ে আবেদন করেন। উপ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেন আবেদনটি বিসিক চেয়ারম্যানের অফিসে ফরওয়ার্ড করার জন্য এসকেন্দার ঢালীর কাছে এক লাখ পঁচিশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।’
উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এসকেন্দার ঢালী বাধ্য হয়ে ইতিপূর্বে তাঁকে ৪৭ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন। ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে চাপ প্রয়োগ করেন উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেন। আরও ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দিলে ফরওয়ার্ড বা ফাইলে স্বাক্ষর করবেন না বলে তাঁকে জানিয়ে দেন।’
দুদক ও স্থানীয় সূত্র বলছে, শরীয়তপুর শহরের প্রেমতলা এলাকায় বিসিক শিল্প নগরী অবস্থিত। সেখানে ১০০ টির বেশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্লট রয়েছে। বিসিকের উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা ও জিম্মি করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাঁর স্ত্রীর নামে বিসিকে তিনি প্লটও নিয়েছেন। গত ৩০ মার্চ বদলির আদেশ হওয়ার পরও তিনি শরীয়তপুর কার্যালয়ে অফিস করে যাচ্ছেন। তিনি গত ৩০ মার্চের আগের তারিখ দিয়ে বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করছেন বলে জানান দুদক ও বিসিকের লোকজন। অথচ ১ এপ্রিল থেকে তার বিসিকের বরগুনা জেলা কার্যালয়ে অফিস করার কথা।
এ বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুদকের একটি দল ফাঁদ মামলা পরিচালনা করে এবং শরীয়তপুর বিসিক কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয়। পরে ওই ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে ঘুষের টাকা আদায় করার সময় উপ ব্যবস্থাপক মনির হোসেনকে ঘুষের পঞ্চাশ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’