প্রতিবন্ধী মীর রুস্তম আলী (৮১)। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার আশফোরদী গ্রামের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) মৃত। ফলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ায় ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছেন। এমনকি প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্তদের তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছে সমাজ সেবা অফিস। গত চার বছর ধরে ভাতা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন পার করছেন তিনি।
মীর রুস্তম আলীর অভিযোগ, তার প্রতিবন্ধী ভাতা অন্য কাউকে পাইয়ে দিতে জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হাল-নাগাদ করার সময়, আমার ভাতা অন্য কাউকে ভাতা পাইয়ে দিতে মুকন্দপুট্টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সী টাকার বিনিময়ে প্রতিবেশী মীর কুদ্দুস আলীর যোগসাজশে আমাকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত দেখিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি জীবিত থাকতে মৃত ঘোষণা করায়, আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে দিয়েছে সমাজ সেবা অফিস। আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারছি না। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে মৃত ঘোষণা করায়, আমি আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমার ক্ষতি যারা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই এবং আমার ক্ষতিপূরণ চাই।’
অভিযোগ স্বীকার করে স্কুলশিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মীর রুস্তম আলীর প্রতিবেশী মীর কুদ্দুস আলীর তথ্যের ভিত্তিতে তাকে মৃত ঘোষণা করে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ফরম জমা দিয়েছি। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। আমি সঠিক নিয়ম মেনেই কাজ করেছি।’
অপরদিকে মীর কুদ্দুস আলী বলেন, ‘স্কুলশিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সীকে আমি চিনি না। শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সী আমার কাছে তথ্য নিতে আসেননি। মীর রুস্তম আলী সম্পর্কে আমি এ ধরনের কোনো তথ্য তাকে দিইনি।’
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, ‘এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখাসহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’