হয়রানি ও অযথা জরিমানা বন্ধের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দিনভর দোকানপাট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ ধর্মঘটে যাওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েন। অনেকেই কাঙ্ক্ষিত পণ্য না নিয়ে ফিরে গেছেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার র্যাব-১০ ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত দিনব্যাপী মিটফোর্ড এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালায়। তারা সেখান থেকে নকল গ্লুকোজ টেস্ট স্ট্রীপ, ভিটামিন ডি-৩ ইনজেকশনসহ বিপুল পরিমাণ নিবন্ধনবিহীন ওষুধ এবং মেডিকেল ডিভাইস উদ্ধার করে। এ সময় ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৪২ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল।
র্যাব আরও জানায়, মিটফোর্ড এলাকার তপু অ্যান্ড ব্রাদার্স, সামিয়া এন্টারপ্রাইজ, নিপা সার্জিক্যাল মার্ট, আই আর এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল সার্জিক্যাল অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স, মুন নাইট মেডিসিন অ্যান্ড সার্জিক্যাল, মুনলাইট সার্জিক্যাল, আমিন ড্রাগ স্টোর, টুমপা ড্রাগ, জি এস সার্জিক্যাল সেন্টার ও ভাই ভাই সার্জিক্যাল মার্টকে জরিমানা করা হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীরা তাঁদের দোকানপাট বন্ধ রেখে আন্দোলন করছে। তারা বলছে, সুনির্দিষ্ট কোনো দোকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে অভিযান করতে হবে। বৈধভাবে আমদানি করা পণ্য ঢালাওভাবে ডিএআর নম্বর না থাকার অজুহাতে দোকানদারদের জরিমানা বা হয়রানি করা যাবে না।
মিটফোর্ড এলাকার সাদ গোল্ডেন টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন বলেন, ‘আমরা সর্বদা নকল-ভেজালের বিপক্ষে। কেউ নকল করলে তাঁকে জেল-ফাঁসি দিলে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করবেন। তবে ডিআরএ নম্বর না থাকায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের জরিমানা না করে আমদানিকারকদের জেল-জরিমানার আওতায় আনার দাবি জানাই। সাধারণ ব্যবসায়ীরা যেন হয়রানির শিকার না হন।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হচ্ছে নকল-ভেজাল ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইসের স্বর্গরাজ্য। এসব এলাকা থেকে ভেজাল পণ্য সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা প্রশাসনকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তাঁদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। গত কয়েক মাস আগে মুকুল নামে একজন বড় ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, নকল ওষুধ ও ডিভাইসের কারণে অনেক মানুষ মৃত্যুর কবলে পড়ছেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।