শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরে এক গৃহবধূ তাঁর তিন সন্তানসহ নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে এক বছর ও তিন বছর বয়সী সন্তানকে উদ্ধার করতে পারলেও এখনো সাত বছর বয়সী সন্তানসহ নিখোঁজ রয়েছেন ওই গৃহবধূ।
স্থানীয়রা বলছে, ডায়াপার পরনে থাকায় ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
আজ রোববার সকালে নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর বাজার সংলগ্ন কীর্তিনাশা নদীতে সন্তানসহ ঝাঁপ দেন ওই তিনি। পরে খবর পেয়ে দুপুর ১টা নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধারকাজ শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের না পেয়ে উদ্ধারকাজ স্থগিত রাখেন তারা।
আগামীকাল সোমবার সকাল থেকে আবার উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের উদ্ধারে মাদারীপুর থেকে আসা চার সদস্যের একটি ডুবুরি দল ও নড়িয়া উপজেলা দমকল বাহিনীর সাত সদস্যদের একটি দল অংশ নেয়।
ওই গৃহবধূর পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কারণে ওই গৃহবধূ তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
নিখোঁজ ওই গৃহবধূর নাম—সালমা বেগম (২৯)। তিনি নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের আজবাহার মাতবরের স্ত্রী। আজবাহার মাতবর ভোজেশ্বর বাজারে পাটের ব্যবসা করেন।
এখনো নিখোঁজ রয়েছে তাদের বড় ছেলে সাহাবীর (৭)। উদ্ধার হয়েছে—আনিকা (৩) ও জাফরকে (১)।
এ বিষয়ে জপসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মাতবর আজকের পত্রিকাকে জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে সালমা তার তিন সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। ডায়াপার পড়ানো অবস্থায় থাকায় ছোট দুই শিশু নদীতে ভেসে ছিল। তাই তাদের জীবিত উদ্ধার করা গেছে। ওই দুই শিশু এখন সুস্থ রয়েছে। সালমা ও তার বড় ছেলেকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে নড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ও মাদারীপুর থেকে আসা একটি ডুবুরি দল।
নড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের লিডার রওশন জামিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সাত সদস্যদের একটি দল বেলা ১১টার সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। তার আগেই স্থানীয়রা দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আমরা এসে অভিযান শুরু করি এবং ডুবুরি দল পাঠানোর জন্য মাদারীপুর ফায়ার স্টেশনে কল করি। দুপুর ১টার সময় মাদারীপুর থেকে চার সদস্যদের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত মা সালমা ও তার এক সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যার পর অভিযান স্থগিত করা হয়েছে এবং আগামীকাল সকাল থেকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।’
এ বিষয়ে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরে তিন সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া সালমা বেগম ও তার এক ছেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’