ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের তৎকালীন সেক্রেটারি জয়গোপাল সরকারকে চার মামলায় জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এবার এ জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এই স্থগিতাদেশ দেন।
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জয়গোপাল সরকারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন জানালে শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত ছয় সপ্তাহের জন্য জামিন স্থগিত করেন।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশের ফলে জয়গোপাল মুক্তি পাচ্ছেন না।
জয় গোপাল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন ফুটবলার ছিলেন। অবসরে গিয়ে ক্লাবটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও পরে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হন। গত বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ দুই ভাই এনু ও রুপনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাঁদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে ৫ কোটি টাকা ও সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাঁদের নামে ছয়টি মামলা হয়।
গ্রেপ্তারের পর গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা ও ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি সোনা জব্দ করে র্যাব। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়। সিআইডির পাশাপাশি দুদকের অনুসন্ধানেও এনু-রুপনের বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য মিলেছে, যার ভিত্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকেও পৃথক মামলা করা হয়েছ। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারী থানায় মোট চারটি মামলা হয়।
গত বছর ২৩ জুলাই অর্থ পাচারের চার মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডের অন্যতম হোতা, আলোচিত দুই ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি পুলিশ।
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়া আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে অর্থপাচারের ঘটনায় জয়গোপালের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে অর্থপাচারের চার মামলায় জয়গোপালকেও আসামি করা হয়। ২০২০ সালের ১৩ জুলাই জয়গোপালকে গ্রেপ্তার করা হয়।