ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা নেওয়ার জন্যই চালক হুসাইন ব্যাপারী (১৩) হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে হত্যা করে রিকশার ব্যাটারি মাত্র সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের মামলায় মূল আসামিসহ দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন শহরের ভাটিলক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা প্রধান আসামি তুফান চৌধুরী (২১) এবং রিকশার ব্যাটারি ক্রেতা শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকার আল-আমিন (৩২)। হুসাইন হত্যাকাণ্ডে তুফানসহ আরেক অজ্ঞাত ব্যক্তি সরাসরি জড়িত ছিলেন। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি (২২) পলাতক বলে জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল জলিল।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রিকশাচালক হুসাইন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিজের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসপি আব্দুল জলিল বিভিন্ন তথ্য দেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের আগে ২৫০ টাকায় রিকশাটি ভাড়া করে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরেন হত্যাকারীরা। পরে রাতে হুসাইনকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পরদিন কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় বোন চম্পা বেগম (২৯)।
গত ৩ জানুয়ারি সকালে শহরের ভাটিলক্ষ্মীপুরের মেহগনিগাছের বাগান থেকে হুসাইনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে শহরের চর টেপাখোলা ব্যাপারীপাড়া এলাকার মৃত খোকা ব্যাপারী ছেলে। হুসাইন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ আগে তার বাবা মারা যান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ওই দিন বিকেলে শহরতলির ফরিদপুর সরকারি কলেজের পাশ থেকে ব্যাটারিবিহীন রিকশাটি উদ্ধার করা হয়। পরে সন্দেহজনক হিসেবে তুফান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা তিনি স্বীকার করেন।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, ২৫০ টাকায় হুসাইনের রিকশা ভাড়া করে তুফান চৌধুরী ও অপর একজন। পরে তাঁরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভাটিলক্ষ্মীপুরে মেহগনিগাছের বাগানে নিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখে। এরপর রিকশাটি নিয়ে তাঁরা চলে যান। রিকশা থেকে চারটি ব্যাটারি খুলে নিয়ে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকায় ভাঙারি দোকানদার আল-আমিনের কাছে বিক্রি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ বিন কালাম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামানসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।