আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের কারণে দেশে ফেরত আসা সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশের ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।
এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
খালেদ সাইফুল্লাহ নামে আরব আমিরাত ফেরত এক প্রবাসী বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাক্ষাতের অনুমতি না পেলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব এবং আগামী দিনে রেমিট্যান্স বন্ধের ডাক দেওয়া দিতে বাধ্য হব।
প্রবাসীদের তুলে ধরা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা (যেমন—সরকারি উদ্যোগে, বিনা খরচে বিদেশে পাঠানো, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তাদের জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা এবং বয়স্কদের জন্য সরকারি ভাতা নিশ্চিত করা) ; সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, একই মামলায় চলমান গ্রেপ্তার বন্ধ ও বন্দীদের মুক্তির ব্যবস্থা করা; মামলার জন্য দায়ীদের, বিশেষ করে সে সময়ের কূটনৈতিক বিএম জামালসহ সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা; ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের সহায়তায় ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কারাবন্দী প্রবাসীদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত করা ও ‘জুলাই বিপ্লবের বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
এ ছাড়া বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্তিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎকারের অনুমতি প্রদান করা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থনের কারণে গ্রেপ্তারকৃত প্রবাসীদের মুক্ত করায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আরব আমিরাত থেকে এখন পর্যন্ত ১৮৯ জন দেশে ফেরত এসেছে এবং এখনো ধরপাকড় চলছে। শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা আরব আমিরাতে সফরে যাবেন। সেই সফরে প্রবাসীদের মামলা তুলে নেওয়াসহ নো-এন্ট্রি তুলে নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে ভূমিকা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি আইন তুলে নিয়েছে আরব আমিরাত সরকার। সরকার উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশিদের নো-এন্ট্রিও তুলে নিবে। ফলে আবারও প্রবাসীরা আরব আমিরাতে যেতে পারবেন বলে আশা রাখি।
লিখিত বক্তব্য খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করে এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেছিল। মিছিলকে কেন্দ্র করে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মিছিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয়, এ রকম অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন কনসাল জেনারেল অ্যাম্বাসেডর জামালের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন—হাফেজ মুহাম্মদ, ফরিদ শাহিন, জাহাঙ্গীর, আমিনুল ইসলাম, মঈন উদ্দিন বাবুসহ।