অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত তিন উপজেলার ২৩ ইউনিয়নে ২০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বজ্রপাতের সময় কিশোরগঞ্জ গ্রিডে পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়। সে সময় থেকে আজ শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন এ তিন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে ৩৩ কেভি সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহের পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার (পিটি) বজ্রপাতে পুড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে হাওরের তিন উপজেলা অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনের মোট ২৩টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। রাতে যানবাহনে চার্জ দিতে না পারায় দিনে যাত্রী পরিবহন করতে পারেননি অটোরিকশার চালকেরা। এ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, হাসপাতালগুলোতেও ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষেরা।
অষ্টগ্রাম উপজেলার পূর্ব অষ্টগ্রামের অটোরিকশাচালক হাফিজ মিয়া (২৮) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাড়ির চাকা ঘুরলে পেটের খিদা মিটে। সেই গাড়ি কারেন্টের কারণে বন্ধ থাকলে কী করে পেট চলে বলুন তো? হাওরে এমনিতে বেশির ভাগ সময় লোডশেডিং থাকে। তারপর একটু ঝড়-টর হলে টানা ১৯-২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।’
শিক্ষার্থী সানিয়া আক্তার (২০) বলেন, ‘সপ্তাহ শেষে সেমিস্টার পরীক্ষা, তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে জীবন হাঁসফাঁস। তার মাঝে টানা ১৯-২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই। এমন সেবা কি দেশের অন্য কোনো এলাকায় আছে? তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কি এর সমাধান নেই? দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই আমরা।’
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির মিঠামইন জোনাল অফিসের অধীনে প্রায় ৭৪ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। অষ্টগ্রামে প্রায় ২৯ হাজার, মিঠামইনে ২৫ হাজার ও ইটনা আংশিকে ২০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনের মোট ২৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি ইউনিয়নে মিঠামইন জোনাল অফিস বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।