ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ স্থবির হয়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দেশের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কিছু আইনজীবীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অত্যন্ত ধৈর্য ও সতর্কতার সঙ্গে এত দিন পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি যে পর্যায়ে যাচ্ছে, তা সারা দেশের বিচারকদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির কতিপয় স্বার্থান্বেষী আইনজীবীর ইন্ধন ও প্রত্যক্ষ মদদে কিছু আইনজীবী গত কয়েক দিনে যে আচরণ প্রদর্শন করেছেন—তা স্পষ্টত অসদাচরণ, বিচারকাজে বাধা সৃষ্টি, বিচারকের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং বিচারকের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একজন বিচারক সাংবিধানিকভাবে আদালতে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করেন। আদালতের আদেশ দ্বারা কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আইনগতভাবে সেই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তা ছাড়া ব্যক্তি বিচারকের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আইনজীবী সমিতির কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদধারী ব্যক্তি মামলায় শুনানি করলে তাঁর পক্ষে আদেশ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের এই মানসিকতা স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য অশনিসংকেত।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের ঘটনায় অনতিবিলম্বে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করার দাবি জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। সেই সঙ্গে পেশাগত অসদাচরণের দায়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সনদ বাতিল এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘটিত একই রূপ ঘটনায় দায়েরকৃত আদালত অবমাননা মামলা ও সংশ্লিষ্টদের সনদ বাতিলের কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করারও দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন—