দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস পর মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় ভিড় জমান মোটরসাইকেল আরোহীরা।
সকাল সাড়ে সাতটায় পদ্মা উত্তর থানা এলাকায় দেখা যায়, মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। একটু একটু করে মোটরসাইকেলগুলো মাওয়া টোল প্লাজা দিকে এগোচ্ছিল। মোটরসাইকেল আরোহীদের বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় অনেক যাত্রীকে পুলিশকে হাসিমুখে সালাম দিতে দেখা যায়। আবার পুলিশও তাদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন।
আজ ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে টোল আদায় করে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার সুযোগ করা হয় মোটরসাইকেল আরোহীদের। তবে এর আগেই সাহ্রি খাওয়ার পর থেকে মাওয়া টোল প্লাজা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই পদ্মা সেতুর উত্তর থানা থেকে টোল প্লাজা পর্যন্ত মোটরসাইকেল আরোহীদের দীর্ঘ সারি লেগে যায়। প্রথমে একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছিল। মোটরসাইকেলের চাপ থাকায় পরবর্তীকালে দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়।
সোহেল বলেন, ‘ঈদের আগেই আমাদের ঈদের খুশি শুরু হয়ে গেছে। গতকাল সারা রাত ঘুমাইনি। কখন সকাল হবে, পদ্মা সেতুতে উঠে বাড়ি যাব। ভোরে মাওয়া এসেছি। টোল প্লাজায় এসেই অল্প সময়ের মধ্যে সেতুতে ওঠার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রথম সড়কপথে কোনো ভোগান্তি ছাড়া বাড়ি যাচ্ছি। খুশি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
রাজধানীর ডেলটা মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাকিল। তিনি খুলনা যাবেন। জানতে চাইলে শাকিল বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে ঈদ করব। ভোরে নামাজ শেষে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে মাওয়া চলে এসেছি। পদ্মা সেতুতে বাইক পারাপার শুরু না হলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো। মানিকগঞ্জ দিয়ে ঘুরে খুলনায় যেতে হতো। পদ্মা সেতু দিয়ে এখন খুব সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে গ্রামের বাড়িতে যাব। সেখানে ঈদ করব। এর চেয়ে বেশি খুশি মনে আর কিছুই হতে পারে না।’
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজ্জব আলী বলেন, ‘যানবাহন আসা মাত্রই টোল পরিশোধ করে সেতু পাড়ি দিতে পারছে। কোথাও কোনো চাপ নেই। সকাল নয়টা পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মোটরসাইকেল পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের অনেক চাপ ছিল। তখন দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়। সকাল আটটার পর চাপ কমতে থাকে। তখন থেকে আবার একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। যদি আবারও চাপ বাড়ে সে ক্ষেত্রে দুটি দিয়ে আদায় করা হবে।’