‘প্রচণ্ড রোদ মাথায় নিয়ে খেতে কাজ শুরু করতে হয়। তীব্র গরমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিট স্ট্রোক মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাচ্ছি। তারপরও জীবিকার তাগিদে দাবদাহের মধ্যে কাজ করতে হয়। এত দিন আমাদের বিশ্রামাগারের কথা কেউ চিন্তা করেননি। এখন সরকার কৃষক শেড নির্মাণ করে দিয়েছে। প্রখর রোদে খেত-খামারে কাজ করার পর এখানে একটু প্রশান্তির পরশ পাই। বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি দূর হয়। তারপর আবার মাঠে নামতে পারি।’
কথাগুলো বলছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বালাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ভরত রায়। শুধু তিনি একাই নন, ওই গ্রামের পুবের বিলে একটি কৃষক শেড নির্মাণ করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অর্ধশত কৃষক। কারণ, কাঠফাটা রোদে কাজের পর এখানেই তাঁরা বিশ্রাম নিতে পারছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও সহযোগিতায় পুবের বিলে ২ শতাংশ জমিতে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কৃষক শেড। এখানে রয়েছে একটি কক্ষ ও এর চারদিকে বসার পাকা বেঞ্চ। সেই সঙ্গে রয়েছে নামাজ আদায়ের জায়গা, টিউবওয়েল, খাবার পানি ও টয়লেট। ২৫ ফুট লম্বা ও ২৫ ফুট চওড়া কৃষক শেডটি নির্মাণ করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। এই ঘরের পাকা বেঞ্চসহ ফ্লোর দিয়ে প্রায় ১০০ কৃষক একসঙ্গে বিশ্রাম নিতে পারবেন। এ ছাড়া কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্র কাজ শেষে সেখানে নিরাপদে রাখতে পারছেন।
বালাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুভাষ মন্ডল বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদে কাজ করতে কষ্ট হয়ে যায়। এখানে আমাদের বিশ্রামের কোনো জায়গা ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষক শেড নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে আমরা বিশ্রাম নিতে পারছি। আগে মাঠে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিতাম। খেতে ওই দিন পুনরায় আসা হতো না। এখন শেডে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিই। তারপর আবার খেতে কাজ করতে পারি।’
ওই বিলের সবজিচাষি আতর আলী বলেন, ‘শুধু বিশ্রাম নয়, ঝড়-বৃষ্টিতে এই শেডে আশ্রয় নিতে পারব। এখানে প্রয়োজনীয় কৃষি যন্ত্রপাতিও রাখাসহ খাবার পানি, টিউবওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। শেডটি কৃষকবান্ধব শেডে পরিণত হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কৃষকেরা এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তারপর ক্লান্তি দূর করে কৃষক আবার মাঠে কাজে নামছেন। এতে তাঁদের কর্মঘণ্টা বেড়েছে এবং কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন। তাই কৃষক শেড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অনন্য উদ্যোগ।’