রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর মামলায় সাংবাদিক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।
অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর অভিযোগে দায়ের করা ওই মামলায় জেলগেটে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ বিকেলে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের এসআই নাজমুল হাসান প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। দুজনের পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ডের আবেদন বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানির সময় সৈয়দ আশফাকুল হক ও তানিয়া খন্দকারকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আদালতকে তাঁরা জানান, এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা।
ঢাকার আদালতের মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মো. হেলাল আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে (৪৭) গৃহকর্মী প্রীতি উরাংয়ের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় সাত ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ওই দিন রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
৬ ফেব্রুয়ারি নিহত কিশোরীর বাবা লোকেশ উরাং বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে ৩০৪ /ক ধারায় মামলা নেওয়া হয়।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সৈয়দ আশফাকুল হক, তাঁর স্ত্রী তানিয়াসহ ওই বাসা থেকে ছয়জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর সৈয়দ আশফাকুল হকের ছেলে-মেয়ে ও দুজন স্বজনকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
মামলায় বলা হয়, সৈয়দ আশফাকুল হকের ভবনের ৯ তলায় বারান্দায় কোনো নিরাপত্তামূলক বেষ্টনী না থাকায় থাই গ্লাসের ফাঁক দিয়ে গৃহকর্মী প্রীতি উরাং পড়ে গিয়ে মারা যায়। এতে বাসার মালিকের ও তাঁর স্ত্রীর দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে।
সাংবাদিক ও তাঁর স্ত্রীর পক্ষে মামলায় শুনানি করেন অ্যাডভোকেট চৈতন্য চন্দ্র হালদার, অশোক কুমার বিশ্বাস, সঞ্জীবচন্দ্র দাস, কাজল রায়, গাজী হাসান মাহমুদ প্রমুখ।