ফরিদপুরের গেরদার কাফুরা লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাস রক্ষার চেষ্টাকারী আহত চা-দোকানি জিন্নাত চার দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
জিন্নাতের বড় ছেলে শামীম শেখ তাঁর বাবার মৃত্যুর বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন। জিন্নাত ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের কাফুরা এলাকার বাসিন্দা। দুর্ঘটনাস্থলের পাশে তাঁর চায়ের দোকান ছিল। এ নিয়ে ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফরিদপুরের গেরদা ইউনিয়নে মুন্সীবাজার কাফুরায় লেভেল ক্রসিংয়ে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের পাঁচজন যাত্রী নিহত হন। নিহতরা নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। ফরিদপুরে বেড়াতে এসে তাঁরা দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত হন ফরিদপুরের শেখ জিন্নাত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল থেকে ঢাকার মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার দিন মাইক্রোবাস বাঁচাতে সড়কের পাশে থেকে সিগন্যাল দিচ্ছিলেন জিন্নাত। সিগন্যাল লক্ষ না করে সড়কে উঠে পড়ে মাইক্রোবাস। এ সময় মাইক্রোবাস রেলের ধাক্কা খেয়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসের কাচ ভেঙে জিন্নাতের বুকে আঘাত লাগে। এতে তাঁর বুকের ছয়টি হাড় ভেঙে যায় এবং কাচের ভাঙা টুকরার আঘাতে পেট ফুটো হয়ে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গুরুতর আহত জিন্নাতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৮ জানুয়ারি বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে ঢাকা মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
জিন্নাতের বড় ছেলে শামীম শেখ বলেন, ‘অসুস্থ বাবাকে ঢাকায় রেফার্ড করলে প্রথমে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি নেয়নি। এরপর আমাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠালে সেখানে ভর্তি করাতে পারিনি। এরপর দুই দিন একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। এর মধ্যে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলাম। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আসন পেয়ে বাবাকে ভর্তি করি। রাত ১২টার দিকে বাবার মৃত্যু হয়।’
শামীম শেখ আরও বলেন, ‘এখন থানা থেকে ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আছি। ছাড়পত্র পাওয়ার পর বাবার মরদেহ নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হব।’