প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ভাঙিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্তে নেমেছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়। আজ বৃহস্পতিবার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফজলুল কবির ঘটনাটি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন।
কমিটিতে জেলা মৎস্য কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহা. নওশের আলমকে প্রধান করে সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ ও বন্দর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রফিক আবেদীনকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, পিয়ন সুমন গত ১৬ মার্চ থেকে অফিসে আসছেন না। তিনি কোনো ছুটিও নেননি। তাঁকে মোবাইল ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায় নেবে না অফিস। তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্ত করতে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
প্রসঙ্গত, পিয়ন মাহাবুব আলম সুমনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন শতাধিক নারী-পুরুষ। এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রত্যেক দরিদ্র অসহায়কে নগদ দুই লাখ টাকা দেবেন, এর জন্য দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে সবাইকে ছয় হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেন মাহবুব।
টাকা নেওয়ার পর সবাইকে একটি করে এসএমএস দেন। তাতে লেখা হয়েছে, ‘আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ব্যাংকে কারও নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। যে মোবাইল নম্বর থেকে মেসেজ দেওয়া হয়েছে, সেটাও ব্যাংকের কোনো ব্যক্তির নয়। এভাবে একটি ইউনিয়ন থেকেই তিনি হাতিয়ে নেন প্রায় ১০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া সব দপ্তরে তাঁর হাত রয়েছে, এমন প্রলোভন দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকার সরকারি ঘর পাইয়ে দেবে বলে জনপ্রতি নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা। দুধের গাভি দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা। মাতৃত্বকালীন, বিধবা, বয়স্ক, খাদ্য ভাতার মতো নানাবিধ ভাতা দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন জনপ্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা। বিশ্বস্ততার জন্য কয়েকজনকে নিজের থেকেই দিয়েছেন কিছু নগদ অনুদান। আর এতেই তাঁর প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ভুক্তভোগীরা খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা।