ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের আদলে একটি নির্বাচনের প্রদর্শনী ও ভোট প্রদান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ‘যত ভোট তত নোট’ স্লোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডামি নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদানের আগে ভোটারদের ‘নমুনা’ টাকা দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস রাইটস ওয়াচ’ প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে এই ডামি নির্বাচন প্রদর্শনী ও ভোট প্রদান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এক মিনিটে কে কত ভোট দিতে পারে, সেটা নিয়েই এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্বাচনে একজনকে কাফনের কাপড় পরে মৃত ব্যক্তি সাজিয়ে ভোট দিচ্ছেন। এ সময় এক বছরের শিশুও নির্বাচনে ভোট প্রদান করে। সেখানে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল আওয়াল, কয়েকজনকে নির্বাচন কমিশনার, প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দেখানো হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভোট সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে’; ‘মধ্য রাতের ভোট’; ‘ডামি নির্বাচন’; ‘দশটা হোন্ডা, দশটা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’; ‘মধ্য রাতের ভোট’; ‘দ্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী’; ‘আপনার বাবার ভোটও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাবা তো মৃত’—ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
আয়োজকেরা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ হাসিনা ডামি নির্বাচনের আয়োজন করে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো ভোট বর্জন করলেও নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়। নির্বাচনে মৃত ও প্রবাসীদের ভোটও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। শেখ হাসিনার নাটকীয়তাকে প্রদর্শনীতে রূপ দেওয়া হয়েছে।
ভোট দিতে আসা কাফনের কাপড় পরিহিত এক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যখন আমি বেঁচে ছিলাম তখন ভোট দিতে পারিনি। আমার মৃত্যুর পরও আমার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। তাই আজকে কবর থেকে উঠে ভোট দিতে এসেছি। গত ১৬ বছর যারা মৃত ছিল কিংবা বিদেশে ছিল, তাদের ভোটও হয়ে গেছে বলে জানানো হতো। আমি এই অবস্থায় এসে “প্রতীকী প্রতিবাদ” জানাতে ভোট প্রদান করতে এসেছি।’
আয়োজকদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৬ বছর ধরে সব ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। নির্বাচনের নামে তামাশা, নিজেরাই প্রধান দল—আবার তারাই বিরোধী দল হিসেবে অংশ নিত। যেখানে মৃত ব্যক্তি এসে ভোট প্রদান করেছিল। এ জন্য আমরা আজকে ডামি ভোট প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। অনেকে প্রতীকী ভোট দিয়েছে, আমরাও তাদের টাকার ডামি নোট দিয়েছি।’