ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর ওই কিশোরীর ছবিসহ সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) প্রকাশ করেন নজরুল শেখ নামের এক কথিত সাংবাদিক (ইউটিউবার)। পরে লজ্জায় এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে যায় ওই কিশোরীর পরিবার।
ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিলে আজ বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফি বিন কবিরের কাছে ওই ইউটিউবার ক্ষমা প্রার্থনা করে একটি মুচলেকা জমা দেন। বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নে ওই কিশোরীকে এক ইজিবাইকচালকসহ দুই যুবক ধর্ষণচেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরী তার বোনের বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে উপজেলার তালমা মোড় থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ওঠে। পরে তাকে নির্ধারিত স্থানে না নিয়ে অটোচালক ও তাঁর বন্ধু কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা চালায়। ওই কিশোরীর চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেন।
এরপর সাংবাদিক পরিচয়ে স্থানীয় পশুচিকিৎসক নজরুল শেখ ওই কিশোরীর ভিডিও জবানবন্দি নেন এবং সেটি তাঁর ফেসবুক পেজে (সত্য নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম) নীতিমালা বহির্ভূতভাবে প্রচার করেন। এ ঘটনার পর লজ্জায় ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবার ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় চলে গেছেন।
এ বিষয়ে ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন বকুল বলেন, ‘ওই কিশোরীকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালালে সে দৌড়ে পাশের একটি বাড়িতে উঠে। পরে আমি খবর পেয়ে তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।’
নগরকান্দা ইউএনও কাফি বিন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিশোরী ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এ ঘটনার পর স্থানীয় এক সাংবাদিক ভিকটিমের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় ওই কিশোরীসহ পরিবার ঢাকায় চলে গেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে ডেকে ওই সাংবাদিক ঠিক করেছে কি না জানতে চেয়েছি এবং তাঁকে বোঝানো হয়েছে, কোনো মুচলেকা নেওয়া হয়নি।’
তবে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে বলে ওই ইউটিউবার নজরুল শেখ আজকের পত্রিকাকে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এবং মেয়েটির উপকারের জন্যই ভিডিওটি প্রকাশ করেছিলাম। নিয়ম না মেনে ভিডিও ছাড়া ভুল হয়েছিল, পরে ডিলিট করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে আজ সকালে ইউএনও আমার কাছ থেকে মুচলেকাও নিয়েছেন।’
এ ঘটনার পরই অভিযুক্ত দুই যুবক পলাতক রয়েছেন। তাঁদের একজনের স্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে তার (স্বামীর) ফোন বন্ধ। কোথায় আছে জানি না।’
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত নেই এবং কেউ থানায় অভিযোগও দেয়নি। অভিযোগ দিলে বা মামলা করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’