ডিগ্রি পরীক্ষা দেওয়ার পর বসে না থেকে পৈতৃক জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মো. ইসমাইল হোসেন। প্রথমবারের মতো হলুদ তরমুজ চাষে পেয়ে যান সফলতাও। চাষের খরচ মিটিয়ে লাভও হয়েছিল কয়েক গুণ। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে মন দিয়েছেন চাষাবাদে।
এবারও হলুদ জাতের তরমুজের চাষ করেছেন তিনি। ভালো ফলনও এসেছে। আবারও লাভের আশা করছেন তরুণ এই কৃষক। তরমুজ চাষ করে বাজিমাত করেছেন তিনি। অনেক বেকার যুবক তাঁর সফলতা দেখে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষিতে। ওই এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের কাছে এখন অনুপ্রেরণার নাম ইসমাইল হোসেন।
জানা গেছে, উপজেলার এগারোসিন্দুর ইউনিয়নের দাওরাইট গ্রামের ছফির উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন। পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। করোনাকালে বসে না থেকে পৈতৃক ৩৩ শতক জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ শুরু করেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে সঠিক পদ্ধতি আর পরিচর্যার মাধ্যমে প্রথমবারেই সফলতা পান তিনি। তাঁর হলুদ তরমুজ চাষ আলোড়ন তুলে উপজেলাসহ দেশজুড়ে। অর্জন করেন জেলা পর্যায়ে সেরা দ্বিতীয় কৃষকের তকমাও। গতবারের সফলতায় এবারও হলুদ তরমুজের চাষ করেছেন ইসমাইল হোসেন। আধুনিক পদ্ধতিতে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফলতা পাচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা।
সরেজমিনে ওই বাগানে দেখা যায়, বাগানের চারদিকে জালের বেড়া। মাচা পদ্ধতিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। মাচায় ঝুলে আছে অসংখ্য তরমুজ। প্রতিটি তরমুজ জালি দিয়ে ঢেকে রাখা। প্রত্যেকটি গাছে ৩-৪টি করে তরমুজ আছে। মাচার ওপরে হলুদ ট্যাপ রয়েছে। কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈবসার ব্যবহার করা হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়েছে হলুদ রঙের ট্যাপ। এতে বিষমুক্ত তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে ওই বাগানে।
বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ডিগ্রি পরীক্ষার পর বসে না থেকে কৃষি কর্মকর্তা সোহাগ ভাইয়ের পরামর্শে হলুদ তরমুজ চাষ শুরু করি। প্রথমবারেই সফল হই। লাভও হয়। তাই এবারও হলুদ তরমুজ চাষ করেছি। বাগানে প্রায় ৪০০টি গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে ৩-৪টি করে তরমুজ ধরেছে। প্রতিটির ওজন প্রায় আড়াই থেকে তিন কেজি। এ জাতের তরমুজের ওপরে হলুদ আর ভেতরে টকটকে লাল হয়ে থাকে। খেতে মিষ্টি।’
আঙিয়াদী ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ বলেন, ইসমাইল হোসেন একজন শিক্ষিত যুবক। পড়ালেখা শেষ করে তিনি চাষাবাদ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে হলুদ তরমুজ চাষে অনুপ্রাণিত করা হয়। প্রথমবারেই তিনি হলুদ তরমুজ চাষে সফলতা পান। এতে আর্থিকভাবেও লাভবান হন তিনি। এবারও তিনি এ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। ফলনও এসেছে ভালো। তাঁকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।