বঙ্গবাজার-সংলগ্ন সেক্রেটারিয়েট রোডের ফুটপাত ঘেঁষে মুখোমুখি বসে আছেন লিমন ব্যাপারী ও লিটন শেখ। লিমন ব্যাপারী আর লিটন শেখ অঝোরে কাঁদছেন। দুজনেরই দুটি করে চারটি দোকান বঙ্গবাজার আর এনেক্স মার্কেটে ৷ আগুনে যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য কোনো সান্ত্বনার বাণীই তাঁদের জন্য যথেষ্ট নয় ৷
সকাল সাড়ে ৬টায় খবর পেয়ে মার্কেটের সামনে আসেন লিটন শেখ ও লিমন ব্যাপারী। আগুন তখন ছড়িয়ে পড়েছে মার্কেটে। কোনোভাবেই ভেতরে ঢোকার অবস্থা নেই ৷ লামিয়া প্যান্ট ওয়্যার নামে বঙ্গবাজারের ২০৮৩ নম্বর দোকানে ক্যাশ ৫০ হাজার টাকা ও মালামাল ছিল ১৩ লাখ টাকার। গোডাউনে ছিল ২০ লাখ টাকার মালামাল। এসবের কোনো কিছুই লিটন শেখ বের করতে পারেননি। সারাজীবন তিল তিল করে গড়া ব্যবসা চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখে কোনোভাবেই নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে বসে পড়েছেন রাস্তায়। লিটন শেখ বলেন, ‘কিছুই বাইর করতে পারি নাই ভাই ৷ টাকা, মালামাল পুড়ে ছাই। আমরা সর্বস্বান্ত হইয়া গেলাম।’
কান্না থামিয়ে এবার কথা বললেন লিমন ব্যাপারী ৷ তিনি বলেন, ‘বঙ্গ মার্কেটে আমার দুইটা দোকান। ক্যাশে ছিল ২৭ লাখ টাকা। হাতের মুঠায় জীবন নিয়া ক্যাশ টাকাগুলা বাইর করতে পারছি ৷ কিন্তু কোনো মালামাল বাইর করতে পারি নাই। দোকানে আছিল ১৪ লাখ টাকার মাল। আমরা ব্যবসায়ীর নিজেগো টাকা আর ঋণের টাকা মিলিয়ে ব্যবসায় লাগাই (বিনিয়োগ)। ঈদের বাজার সামনে রাইহা বর্তমান বড় পুঁজি খাইটাইছিলাম ৷ যহন থাইকা ব্যবসা শুরু হইব, তহনই এই আগুন ৷ আমরা কেমনে, কী করমু!’
দোকানদারদের ভাষ্যমতে, আদর্শ মার্কেটে আগে আগুন লাগে। তারপর সেই আগুন ছড়ায় বঙ্গবাজার, এনএক্স আর ইসলামীয়া মার্কেটে ৷ বঙ্গবাজারে অন্তত সারে তিন হাজার দোকান আছে, যার সবগুলোই পুড়ে ছাই।