গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
জনপ্রিয় টক শো ‘তৃতীয় মাত্রার’ উপস্থাপক ও পরিচালক এবং সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) জিল্লুর রহমানের শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার জুসিরগাঁও গ্রামের বাড়িতে যায় পুলিশ। এ নিয়ে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে চলছে বিতর্ক। পুলিশ বলছে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে তথ্য সংগ্রহের জন্য যাওয়া হয়েছিল।
ঘটনার পর জিল্লুর রহমান এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তথ্য সংগ্রহের জন্য শরীয়তপুরে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে গেছে। তিনি এই বিষয় নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি ঢাকায় থাকেন, তাঁর একটি অফিসও রয়েছে। কোনো তথ্য দরকার হলে পুলিশ সদস্যরা সরাসরি তাঁর কাছে যেতে পারতেন বা তাঁকে টেলিফোন করতে পারতেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ না করে, তাঁর পৈতৃক বাড়িতে গেছে পুলিশ।
জিল্লুর এতে জানান, তাঁকে, তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীদের ভয় দেখানোর জন্য এটা করা হয়েছে। উপস্থাপক হিসেবে তাঁর ভূমিকা এবং সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধকতা তৈরির উদ্দেশে পুলিশ এটা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধু নিন্দনীয় নয়, এটা দেখা অত্যন্ত বিরক্তিকর যে আমার কণ্ঠরোধ করতে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে তথ্য সংগ্রহের যে ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সেটি খুবই সাধারণ ছিল বলে জানায় গোসাইরহাট থানা-পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোসাইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিট পুলিশিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভাড়াটিয়া ও কেয়ারটেকারদের তথ্য সংগ্রহের জন্য বিগত পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। তবে আমি জানতাম না যে এটা জিল্লুর রহমানের বাড়ি। তাঁর একজন আত্মীয় জিল্লুর রহমানের পরিচয় দিয়ে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু আমরা ঘরে না ঢুকে শুধু তার নিকট জিল্লুর রহমানের ফোন নম্বর নিয়ে চলে আসি।’
মতিউর রহমান আরও বলেন, ‘সম্ভবত জিল্লুর রহমানের ওই আত্মীয় তাঁর নিকট বিষয়টিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে। যার কারণে জিল্লুর রহমান ফেসবুকে এভাবে পোস্ট করেছেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও থানায় বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়েছেন।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার বলেন, ‘পুলিশের একটি দল বিট পুলিশিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জিল্লুরের গ্রামের বাড়ি পরিদর্শন করেছে। গোসাইরহাট উপজেলার সম্মানিত ও স্বনামধন্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।’