শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় আলী আকবর হাওলাদার (৪৫) নামের এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান তাঁর পরিবার।
গতকাল শনিবার রাত ১টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত আলী আকবর উপজেলার দারুল আমান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গুয়াখোলা গ্রামের জব্বার হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আকবর হাওলাদার ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গত পাঁচ মাস আগে একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং ধারদেনা করে ছয় লাখ টাকা দিয়ে ছেলে জিহাদকে সৌদি আরব পাঠান। মেয়ে আশামনি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
প্রতি সপ্তাহে সাত হাজার টাকা ঋণের কিস্তি দিতে হতো আকবরকে। কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। দিশেহারা পড়ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার পরে স্ত্রী রুনা বেগম মেয়ে আশামনিকে নিয়ে একই এলাকার বোনের বাড়ি যান।
রাত ১১টার দিকে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে আশামনি বাড়ি ফিরে দেখেন আকবর বিষ খেয়ে ঘরের মেঝেতে পড়ে পড়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রাত ১টার দিকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে সাত হাজার টাকা ঋণের কিস্তি দিতে হয়। তারপরে আত্মীয়স্বজনেরাও তাদের কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে আমার স্বামী হতাশায় ভুগছিল। গতকাল সন্ধ্যার পরে আমি মেয়েকে নিয়ে ননদের বাড়ি গেছিলাম। রাত ১১টার দিকে ফিরে এসে দেখি আমার স্বামী ঘাস মারার বিষ খেয়ে ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।’
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, এক ভ্যানচালক বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মরদেহে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।