নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠনসহ সাঁওতালদের পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নটর ডেম কলেজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় এই আশ্বাস দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব নৃগোষ্ঠীকে নিয়ে আমরা একসঙ্গে বসবাস করতে চাই। তাঁদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, ভূমি সমস্যার সমাধানের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন ও সমতল থেকে জাতীয় সংসদে একজন প্রতিনিধি রাখা—এই তিনটি দাবি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাঁওতাল প্রতিনিধিদের বলেন, এসব দাবি নিয়ে আপনারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রীর দ্বার সবার জন্য খোলা, আপনাদের দাবি যৌক্তিক হলে তিনি মেনে নেবেন। সব দাবি আপনারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠান।’
প্রধানমন্ত্রী সাঁওতালদের সব দাবি সম্পর্কে জানেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) একে একে সব দাবি পূরণ করবেন। যেগুলো অল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো তিনি অল্প সময়েই বাস্তবায়ন করে দেবেন। যেগুলো বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে, সেগুলোও সময় নিয়ে তিনি করে দেবেন।
পাশাপাশি সাঁওতালদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিজে দেখবেন বলে জানান মন্ত্রী। আর সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষা চালুর জন্য তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তেব্যের আগে উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রভাত টুডু তাদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাঁর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, বাংলাদেশ খ্রিষ্টিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি বদন মুরমু প্রমুখ। পরে আলোচনা সভা শেষে সাঁওতাল ভাষায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে তাঁদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। তাই সিপাহী বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালেরাই প্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন। ১৮৫৫ সালে সাঁওতালরা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিলেন তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য। তাঁরা এ যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ইংরেজদের শাসন-শোষণ, সুদখোর, মহাজন ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধ শেষ হয় ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে।