ইতালি, ফ্রান্স, মাল্টাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে পাসপোর্ট প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ‘অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের’ সদস্যরা। আজ শনিবার ওই ১০ হাজার প্রবাসীর পাসপোর্ট সংশোধন এবং নতুন পাসপোর্ট প্রদানের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ‘বাংলা প্রেসক্লাব ইতালি’র সভাপতি ও অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাওন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশিরা ইউরোপে প্রবেশকালে নাম-ঠিকানা, জন্ম তারিখ এমনকি ধর্মও পরিবর্তন করে থাকেন। ফলে তাঁরা পাসপোর্ট পরিবর্তন করতে পারছেন না।’
তিনি তাঁর বক্তব্যে জানান, সরকার আগামী ২৮ এপ্রিলের পর পাসপোর্ট পরিবর্তনের আর কোনো আবেদন গ্রহণ করবে না বলে ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান জানিয়েছেন। এসব বাংলাদেশিকে মানবিক দৃষ্টিতে পাসপোর্ট পরিবর্তনের সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয় ওই সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় সংগঠনটি এই সমস্যা সমাধানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও হস্তক্ষেপও কামনা করেছে।
শাওন আহমেদ আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া হয়ে বহু টাকার বিনিময়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশিরা ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। তাঁদের অনেকের সলিলসমাধি ঘটছে ভূমধ্যসাগরে। বেশ কিছু এনজিওর উদ্ধারকারী জাহাজ বাংলাদেশিসহ বিদেশি অবৈধ শরণার্থীদের উদ্ধার করে ইতালির সিসিলি দ্বীপের লাম্পেদুসা সমুদ্রবন্দরে নিয়ে যায়। কখনো তাঁদের তীরে নামার অনুমতি দেওয়া হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব অভিবাসীকে দিনের পর দিন জাহাজেই অবস্থান করতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২০ সালে ইতালিতে বাংলাদেশি অবৈধ শরণার্থী প্রবেশ করেছে ৯০৪ জন। এ ছাড়া ২০২১ সালে ইতালিতে অবৈধ শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছে ৭ হাজার ৮২৪ জন বাংলাদেশি। এদের অনেকের বয়সই ১৮ বছরের নিচে। অবৈধভাবে প্রবেশ করা এসব শরণার্থীকে রাখা হয় শেল্টার হোমে।
সাংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সহসভাপতি ফেরদৌস করিম আখঞ্জী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুব আলম প্রধান, কমিউনিটির নেতা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।