রাজধানীর উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে র্যাব-পুলিশ। উত্তরা এলাকা থেকে কাউকে গ্রেপ্তারের খবর না পাওয়া গেলেও যাত্রাবাড়ী থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। আজ শুক্রবারও চলছে তল্লাশি।
র্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উত্তরার বিএনএস সেন্টারে সামনে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে, ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের ধউর চেকপোস্ট ও উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশির কার্যক্রম দেখা যায়।
এ ছাড়া উত্তরখানের তেরমুখ ব্রিজ, দক্ষিণখানের আজমপুর, আবদুল্লাহপুর রেলগেট, কসাইবাড়ী, হাজি ক্যাম্প, বিমানবন্দরের জসীমউদ্দীন পাকার মাথা, আশুলিয়ার বিরুলিয়া ব্রিজ এলাকায় গতকাল রাত থেকে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয়, যা আজও চলছে।
এ ছাড়া খিলক্ষেতের ৩০০ ফুট এলাকায়ও র্যাব-পুলিশের চেকপোস্ট লক্ষ করা গেছে।
র্যাব ও পুলিশ সূত্র বলছে, পল্টনে আগামীকাল (শনিবার) বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই বিশেষ তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
চেকপোস্টগুলোয় ঘুরে দেখা যায়, সন্দেহজনক প্রতিটি দূরপাল্লার বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল তল্লাশি করা হচ্ছে।
আবদুল্লাহপুরের পলওয়েল মার্কেটের সামনে নিরাপত্তা তল্লাশি বসিয়েছে র্যাব-১। সেখানে কর্মরত ডিএডি এফ এম ইমতিয়াজ আলী আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম সকাল থেকেই চলছে। কিন্তু পালাবদল হয়ে আমি দুপুর থেকে তল্লাশি চালাচ্ছি। পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
ডিএডি ইমতিয়াজ আলী বলেন, ‘তল্লাশির আওতায় প্রাইভেট কার, মাইক্রো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস ও মোটরসাইকেল রয়েছে। র্যাব-১-এর পক্ষ থেকে ৩০০ ফুট এলাকা ও মহাখালীর আমতলী এলাকাতেও চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।’
উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনের চেকপোস্টে কর্মরত উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ঢাকার প্রবেশমুখে রেগুলার চেকপোস্ট পরিচালনা করি। আজও চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চেকপোস্ট থেকে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রো ও মোটরসাইকেল যখন যেটি সন্দেহ হয় সেটি তল্লাশি করছি।’
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তেরমুখ ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গতকাল রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) আমরা পাঁচজনকে আটক করেছিলাম।’
এদিকে আজ বেলা ৩টা থেকে যাত্রাবাড়ীর সাদ্দাম মার্কেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ সদস্যদের গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এ সময় বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন থামিয়ে মানুষের দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করতে দেখা যায়। তখন অন্তত ১৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বিশেষ করে ঢাকামুখী প্রবেশের দূরপাল্লার আন্তজেলার বাসগুলোয় বেশি তল্লাশি করা হয়। শুধু তা-ই নয়, এখানে পথচারীদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা কমে গেছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম বলেন, ‘এ অভিযান আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। যাদের সন্দেহ হয়, তাদের আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’