হোম > সারা দেশ > ঢাকা

অষ্টগ্রামে যুবককে হত্যাচেষ্টা, মামলায় প্রবাসী ও কারাবন্দীর নাম

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় যুবককে মারধরের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১২৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অষ্টগ্রাম মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা ও লুটপাতের মামলাটি হয়। এ মামলায় প্রবাসী ও কারাবন্দীকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। মামলা দায়েরের পর থেকে এলাকায় তৈরি হয়েছে সমালোচনার।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, ৬ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল বের হয়ে পূর্ব অষ্টগ্রাম আখড়া বাজার এলাকার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গেলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিলে হামলা করে। হামলায় মামলার বাদী মনির মিয়াকে গুরুতর আহত করে অবস্থায় ফেলে রেখে যায় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। মনির মিয়া নিজেকে উপজেলা যুবদলের কর্মী বলে পরিচয় দেন।

তবে স্থানীয় এলাকাবাসী ও আখড়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন কোনো ধরনের মিছিল হয়নি বা ককটেল বিস্ফোরণ হয়নি। এজাহারে বর্ণিত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা এ মামলাকে প্রতিহিংসামূলক মামলা বলে মনে করছেন।

মামলার এজাহারে দুজন আসামির নাম রয়েছে। আসামিদের মধ্যে এজাহারে উল্লেখিত পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা  ৯৫ নম্বর আসামি খান প্রিয়। তিনি গত দেড় বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত কাতারে প্রবাসী হন। ৯৭ নম্বর আসামি অজিত খান বাবুও বর্তমানে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন।

এ ছাড়া ১১৫ নম্বর আসামি আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তার খা অন্য একটি মামলায় ঘটনার দিন কারাবন্দী ছিলেন। ঘটনার দুদিন পর ৮ আগস্ট জামিনে কারামুক্ত হন তিনি। এ মামলায় প্রবাসী ও কারাবন্দীকে কীভাবে আসামি করা হলো এ প্রশ্নে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীরা মনে করেন সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলার প্রবাসী আসামি খান প্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৮ আগস্টের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ থেকে রাতে রওনা হলে ৯ আগস্ট সকালে তিনি কাতারে পৌঁছান। সেদিন থেকে অদ্যাবধি তিনি কাতারে রয়েছেন। প্রবাসে থেকেও ২০২৪ সালের ৬ আগস্টের মামলায় তিনি আসামি হওয়ার বিষয়টি হাস্যকর বলে দাবি করেছেন।

মামলার আরেক আসামি মুক্তার খা জানান, তিনি অন্য একটি মামলায় ঘটনার দিন কারাগারে ছিলেন। ঘটনার দুদিন পর ৮ আগস্ট তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। কারাগারে থেকেও মামলার আসামি হওয়ার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে মনে করেন। ঘটনার দিনের সঠিক তদন্তের দাবিও জানান তিনি।

প্রবাসী ও কারাবন্দীকে কেন মামলার আসামি করা হলো এমন প্রশ্নে মামলার বাদী মোহাম্মদ মনির মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই আসামিদের নাম দেওয়া হয়েছে। সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।’

এজাহারে বর্ণিত ঘটনার তারিখ অনুযায়ী ওই দিন মামলার বাদী ও সাক্ষীদের কেউ আহত অবস্থায় অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই দিন এমন কোনো গুরুতর আহত রোগী চিকিৎসা নিতেই আসেনি।

মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনার তারিখে পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নে কোনো ধরনের বিজয় মিছিল করা হয়নি। এমনকি ওই দিন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে উপজেলাতেই কোনো ধরনের কর্মসূচি করা হয়নি। মামলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম জড়ানো দুঃখজনক বলেও দাবি করেন। তবে এই বিষয়ে শিগগিরই একটি বিবৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

মামলায় অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক হায়দারি বাচ্চু প্রধান আসামি, ২ নম্বর আসামি তাঁর ছেলে বিপ্লব হায়দারি, ৩ ও ৪ নম্বর আসামি যথাক্রমে রাজিব আহমেদ হেলু ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তৌফিকুল ইসলাম তারিফ। এ ছাড়া অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস, অষ্টগ্রাম রোটারী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খান ও পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া।

মামলার বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস বলেন, ‘মনির মিয়ার ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সায়েদ আহাম্মদ জানান, মামলার আসামি যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের নাম চার্জশিট থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হবে। মামলার এজাহারে বর্ণিত সকল ঘটনা সত্য বলেও জানান তিনি।

উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, ‘আমরা এসব প্রতিহিংসামূলক মামলা মোকদ্দমার পক্ষে নই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও নেতা তারেক রহমান দলের সকলকে সতর্ক করে বলেছেন কাউকে যেন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা না দেওয়া হয়। তারপরও এই মামলাটি কেন করেছে এ বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অষ্টগ্রাম উপজেলার ক্যাম্প কমান্ডার মেজর আরিফা খাতুন বলেন, ‘মামলায় আসামিদের কয়েকজন প্রবাসে থাকেন বলে খবর পেয়েছি। মামলাটা যেহেতু দায়ের হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রে আমাদের হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা নেই। তবে প্রবাসী যারা মামলার আসামি হয়েছেন তারা থানার ওসি বরাবর একটি দরখাস্ত দিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থানের কথা জানাতে পারেন।’

অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলায় বর্ণিত ঘটনার সঠিক প্রমাণাদি পেলে তা তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিটি গ্রুপের ভোজ্যতেলের কারখানা পরিদর্শনে ভোক্তা-অধিকারের কর্মকর্তারা

আন্তকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের সাফল্য

পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

ব্রির ছয় দিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা শুরু

সিরাজদিখানে কুকুরের কামড়ে ৫ শিশুসহ আহত ১৫

সাবেক এমপির নামফলক ভেঙে গণপিটুনি খেলেন শ্রমিক দল নেতা

নাগরপুরে আ.লীগ নেতা কুদরত আলী গ্রেপ্তার

ইসমাইলের মৃত্যু: ডেলটা হেলথ কেয়ারের চিকিৎসকসহ ৫ জন কারাগারে

অতিরিক্ত সচিব সেলিমের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭

মির্জাপুরে রাতের আঁধারে নদীতীরের মাটি কাটায় ২ লাখ টাকা জরিমানা

সেকশন